ঢাকা-কক্সবাজারসহ ছয় রুটে বাড়ল ট্রেনের ভাড়া
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:২৪
ঢাকা-কক্সবাজারসহ ছয় রুটে বাড়ল ট্রেনের ভাড়া
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে।
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা-কক্সবাজারসহ দেশের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে।


গত ১৩ বছরে সরাসরি বা কৌশলে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে অন্তত পাঁচবার। এবার সরাসরি টিকিটের দাম না বাড়িয়ে ‘পন্টেজ চার্জ’ বা মাশুল আরোপের মাধ্যমে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে আসন ও রুটভেদে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে।


রেলওয়ের ভাষায়, রেলপথে কোনো সেতু বা সমজাতীয় স্থাপনা থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটাতে যে অতিরিক্ত মাশুল নেওয়া হয় সেটিই পন্টেজ চার্জ। নিয়ম অনুযায়ী ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতুকে আড়াই কিলোমিটার পথ হিসেবে গণনা করা হয়। ফলে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর দূরত্ব ধরা হয় ২৫ কিলোমিটার। এতে কাগজে-কলমে রুটের দৈর্ঘ্য বেড়ে যায় এবং সেই অনুপাতে ভাড়াও বাড়ে।


রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-জামালপুর ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ- এই ছয় রুটের ১১টি সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়েছে।


রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়ের আয় বাড়ানো ও ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে গত ২৫ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামের উপস্থিতিতে বিশেষ বৈঠক হয়। সেখানে টিকিটের ভাড়া না বাড়িয়ে কীভাবে রাজস্ব বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে ১৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ১০০ মিটার বা তার বেশি দৈর্ঘ্যের সেতুগুলোতে পন্টেজ চার্জ আরোপ।


রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, সব রুটে নয়, নির্দিষ্ট কিছু রুটে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এটি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে এবং পুরোনো সেতুগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটাতেই এই ব্যবস্থা।


ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া ২০১২ সালে ছিল ৫৮৫ টাকা। ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয় ৭২৫ টাকা। ২০২৪ সালে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের পর ভাড়া দাঁড়ায় ৮৫৫ টাকা। নতুন পন্টেজ চার্জ যুক্ত হওয়ার পর এখন যাত্রীদের দিতে হচ্ছে ৯৪৩ টাকা।


ঢাকা-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া এক হাজার ৩২২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৪৪৯ টাকা। এসি বার্থের ভাড়া ২ হাজার ৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৬ টাকায়। এ রুটে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে।


এর আগে ২০১২ সালে একলাফে ৫০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়। ২০১৬ সালে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া বাড়ে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। ২০২২ সালে নন-এসি প্রথম শ্রেণির টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। ২০২৪ সালে অতিরিক্ত বগির টিকিটে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়। একই বছরের মে মাসে দীর্ঘপথে যাত্রীদের রেয়াতি সুবিধাও প্রত্যাহার করা হয়।


ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে ভোক্তা সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, রেল স্বল্প আয়ের মানুষের সবচেয়ে সাশ্রয়ী পরিবহন। বারবার কৌশলে ভাড়া বাড়ানো সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। সরকার চাইলে রেলের অভ্যন্তরীণ অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করেই রাজস্ব বাড়াতে পারে।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com