'মাননীয় নেত্রী, চারপাশে ঘোর অন্ধকার; কেউ নাই আপনি ছাড়া'
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৩৯
'মাননীয় নেত্রী, চারপাশে ঘোর অন্ধকার; কেউ নাই আপনি ছাড়া'
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

এসআই পরীক্ষা দিলাম। সব ধাপ পাড় হয়ে লিখিত অনেক ভালো দিলাম। ২৫০ এর মধ্যে ১৯০+ নিশ্চিন্তে পাবো ইনশাআল্লাহ।


গণিত সব হবে। মেন্টাল এবিলিটি ২/৩ টা প্রশ্ন ভুল ছিল প্রশ্নপত্রেই, বাকি সবই হয়েছিল। বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান অনেক ভালো লিখেছিলাম। জীবনের সেরা পরীক্ষা দিয়েছিলাম। অনেক আশাবাদী ছিলাম, কিন্তু আমার রোলটা আসে নাই।


এখন বলেন, ছাত্রলীগ করা কি অপরাধ? আমার মতো এমন অসংখ্য ছেলের সাথে এমন হয়েছে। অনেক ভালো পরীক্ষা দিয়েও চাকরিটা হলো না। এর বিপরীতে ১০ নম্বরের গণিত অ্যান্সার করতে না পারা, অনেকগুলো মানসিক দক্ষতা কাটা যাওয়া ছেলেদেরও চাকরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের হলো না।


মাননীয় নেত্রী,


আপনাকে বলা হয় ছাত্রলীগের ছেলেরা নাকি ভাইভা পর্যন্ত যেতে পারে না। লেখাপড়া করে না। অথচ আমি এই পর্যন্ত একাধিক পরীক্ষার ভাইভা দিয়েছি। চাকরি পাইনি। এসআই নিয়ে প্রচণ্ড আশাবাদী ছিলাম। দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। অনেকেই হাসিমুখে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, অনেকেই কুকুরের মতো আচরণ করেছেন।


আপনি ছাড়া আমাদের তো দেখার সত্যিই কেউ নাই। আমাদের বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া বাবা-মায়ের অসহায় চোখের জল, আমাদের ঘুমহীন প্রতিটা রাত, আমাদের কয়েক সেকেন্ড ব্যাপী ভিতর থেকে আসা বড় বড় নিঃশ্বাসে অনেক বেদনা জমে আছে, অনেক ক্ষোভ জমে আছে। আমাদের বেদনা শোনার মতো কেউ নাই।


আমি কেন্দ্রীয় কমিটির রানিং নেতা। এমন অসংখ্য ছেলেপুলে ৩/৪ কমিটির নেতা। অনেক ভালো পরীক্ষা দিয়েও কারও চাকরি হয় নাই। সবাই মুখে মুখে বলে, ভাইভা পর্যন্ত আসো। আমরা তো তোমাদের খুঁজি। কিন্তু ভাইভা পর্যন্ত যাওয়ার পর উনাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না।


১০/১২ বছর টানা সংগঠনের জন্য রাতদিন কাজ করেও, যে ছেলেগুলো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো করে। তাদেরকে এভাবেই কষ্ট দেওয়া হয়। আমাদের চারপাশে ঘোর অন্ধকার, আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসে। আমাদের বাঁচার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে হয়।


তথাকথিত নিজেদের মানুষেরা আমাদের সাথে প্রতারণা করে। আমাদের কেউ দেখে না। কেউ দায়িত্ব নেয় না। বাবা-মায়ের বোঝা হয়ে, বুকভরা হতাশা নিয়ে জীবন কাটাচ্ছি। পকেটে টাকা নাই। কেন্দ্রীয় নেতা হয়েও ৩ হাজার টাকার টিউশনি করাই। অনেক কষ্ট করে চলি। যাতে মানুষ খারাপ না বলতে পারে। ভাবছিলাম শেষ বয়সে চাকরিটা হয়ে গেলে, পরিবারের হাল ধরবো। ভালোভাবে বাঁচবো। কিন্তু তা আর হলো না।


আমাদের দুঃখ বলার জায়গা নাই। আমাদের কান্নার আওয়াজ কেউ শোনে না। আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত অন্যায় হয়। আমাদের দাঁতে দাঁত চেপে বেঁচে থাকতে হয়। আমাদের কেউ নাই, কেউ নাই আমাদের আপনি ছাড়া...


লেখক : জুবায়ের আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com