জাস্টিন ট্রুডোর বিচ্ছেদের পর কয়েকদিন ধরে অনলাইনে আলোচনা চলছে ‘নারী আটকায় কিসে?’ নারী আটকায় ভালোবাসায়, যত্নে, সম্মানে, সময়ে। যায় কোনটাই কিনতে পাওয়া যায় না!
পুরুষ মানুষ নষ্ট হয় অঢেল অর্থ আর ক্ষমতায়। এই দুটোই যখন তাদের পাওয়া হয়ে যায় তখন পরিবার, সমাজ, দেশ এবং পৃথিবীকে তাদের দেবার মত আর কিছুই থাকে না। তারপরে তারা যা কিছু করে তার বেশিরভাগই খারাপ উদাহরণ তৈরি করে। অর্থাৎ তারা তাদের জীবনের সর্বোচ্চ সময়টুকু অতিক্রম করেছে বলে ধরে নিতে হবে।
ব্যতিক্রম নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই আছে। ব্যতিক্রম কখনও উদাহরণ হতে পারে না। পুরুষ মানুষের যখন অর্থ ও ক্ষমতা দুটোই থাকে তখন তারা নিজেদের কে ভগবান বলে মনে করে। অহংকার এবং দাম্ভিকতা তাদের আচরণে স্পষ্ট হয়ে উঠে। তাদের তখন পুরোনো কোনকিছু আর ভালো লাগে না। নিত্যনতুন নারী, গাড়ি, বাড়ি লাগে, সাথে লাগে সরাব। পারফিউমের ব্র্যান্ড বদলের মতই প্রতিনিয়ত তাদের নারী, গাড়ি, বাড়ির ব্র্যান্ডও বদল হতে থাকে।
গাড়ি, বাড়ি কথা বলতে পারে না।
তাই পুরুষের অবস্থান পরিবর্তনের খবর তখনও কেউ জানতে পারে না। স্ত্রীরা যখন কথা বলে, নিজের দুরবস্থার কথা যখন ঘরের বাইরে নিয়ে আসে তখনই সমস্যার শুরু হয়। কথা না বলে তাদের ভগবানসুলভ আচরণ মেনে নিয়ে, দুনিয়াদারি ভুলে গিয়ে , স্বামীর কোন কথায় দ্বিমত না করে তাদের পায়ের তলায় বেহেশত খুঁজে নিলে ৫০% সংসার টিকে যায়। ২০% সংসার টিকে থাকে ভালোবাসা, সম্মান আর সমঝোতায়। বাকি ৩০% বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে মানুষ আবার নারীদেরই দোষ খুঁজে বেড়ায়। বিচ্ছেদের পিছনে কেউ কখনও খুঁজে না সেই নারীর বেঁচে থাকার আকুতি, সন্তানদের ভবিষ্যত ভাবনা, আত্মহত্যা করতে না পারার সাহসের অভাব বা পাপবোধটুকু।
আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে স্বামীর অহংকার, দাম্ভিকতা এবং অন্যায় আচরণগুলো মেনে নিলে সংসার টিকে যায়। কিন্ত নারী যদি প্রখর আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন, শিক্ষিত, নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং দায়িত্বশীল হয় তখন পুরুষরা পুরুষত্বহীনতায় ভোগে। তারা চায় তাদের স্ত্রী হবে পরনির্ভরশীল অমেরুদন্ডী শ্রেণির প্রাণী।
নারীরা শিক্ষিত, সচেতন হওয়ায় সবচেয়ে অসুবিধায় পড়েছে তথাকথিত পুরুষরা। অন্যের স্ত্রীরা তাদের কাছে ঐশ্বরিয়া রায় কিন্ত নিজের স্ত্রীকে মনে করে ঘসেটি বেগম।
স্বামী যদি স্ত্রীকে সময় না দেয় তাহলে ট্রুডো আর তমিজ উদ্দীন একই জিনিস। স্ত্রী হিসেবে, নিজের সন্তানের মা হিসেবে যদি সম্মান না দেয় তাহলে বিল গেটস আর বিল ভাউচার এর মধ্যে কোন তফাত নেই। ঋত্বিক না কি রবিউল তখন তা আর ম্যাটার করে না।
তাই সময় থাকতে স্ত্রী কে ভালোবাসুন। তার যত্ন নিন। মানুষ হিসেবে তাকে সম্মান দিন। দিনশেষে তার জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখুন। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তার জন্য যদি আপনি পায়ের পাতাটুকুও ভেজান সে সাঁতার না জানলেও আপনার জন্য বিনাবাক্যে গলা পানিতে নামবে। সারা দুনিয়া আপনার বিরুদ্ধে গেলেও সে ঢাল হয়ে সমস্ত প্রতিকূলতা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। আপনার অপারগতা, উদাসীনতা সে ক্ষমা করে দিবে কিন্তু একবার যদি সে আপনার অবহেলা, প্রতারণা, বেঈমানী টের পায় তাহলে কোনভাবেই তাকে আর ফেরাতে পারবেন না।
এখন আপনার জীবন আপনি কিভাবে যাপন করবেন তা আপনার চয়েস।
(ফেসবুক ওয়াল থেকে)
লেখক: আরিফা জেসমিন কনিকা,
সহ-সভাপতি, সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]