
প্রায় দেড় বছর পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর জলসীমায় পৌঁছেছে গমবাহী একটি জাহাজ।
২৫ অক্টোবর, শনিবার সকালে বন্দর জলসীমায় ‘এমভি নোর্স স্ট্রাইড’ জাহাজটি পৌঁছায়। জাহাজটিতে সরকারি চুক্তির আওতায় আমদানি করা ৫৬ হাজার ৯৫০ টন গম রয়েছে।
এই জাহাজের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানিতে দেড় বছরের খরা কাটল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি হয়েছিল ২০২৪ সালের মে মাসের শুরুতে। সে সময় খাতুনগঞ্জের সাবিসা মাল্টিট্রেড লিমিটেড যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫৭ হাজার ৩৯৯ টনের গম আমদানি করেছিল। তবে সরকারিভাবে গম আমদানির নজির রয়েছে ২০১৭ সালে।
এবার অবশ্য সরকারি পর্যায়ে চুক্তির অধীনে গম আমদানি হয়। জাহাজটিতে থাকা গমের ৬০ শতাংশ খালাস হবে বন্দর জলসীমায়। ছোট জাহাজে স্থানান্তর করে এই গম সরকারি খাদ্যগুদামে নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি সেভেস সিজ শিপিং লাইনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী আকবর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারি চুক্তির ২ লাখ ৪০ হাজার টন গমের প্রথম চালান এটি। এই চালানের ৩৪ হাজার ১৭০ টন চট্টগ্রামের বহিনোর্ঙরে খালাস হবে। সব প্রক্রিয়া শেষে রোববার বিকেলে জাহাজটি থেকে গম খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। বাকি ২২ হাজার ৭৮০ টন মোংলায় নিয়ে খালাস হবে। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় জাহাজটি বন্দর জলসীমায় পৌঁছাবে আগামী ২ নভেম্বর। তৃতীয় জাহাজটি ১১ নভেম্বর এবং চতুর্থ জাহাজটি ডিসেম্বরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের খড়গ থেকে বাঁচতে গত জুলাই মাসে বাণিজ্যঘাটতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সরকারিভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি করে বাংলাদেশ। নানা উদ্যোগের পর বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশে সাধারণত সস্তা গম আমদানি বেশি হয়। এই তালিকায় বড় উৎস দেশ হলো রাশিয়া ও ইউক্রেন। প্রতি বছর এসব দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ গম আমদানি হলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি খুব বেশি ছিল না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যে দেখা যায়, গত ২২ বছরের মধ্যে ১৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সোয়া ২২ লাখ টন গম আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে ১৭ লাখ টনের বেশি আমদানি হয়। সরকারি খাতে তিন লাখ টন আমদানি হয়েছে। এ ছাড়া খাদ্যসহায়তা হিসেবে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, কেয়ার বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংস্থা প্রায় দুই লাখ টন গম এনেছে দেশটি থেকে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই দশকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ গম আমদানি হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে দেশটি থেকে সাড়ে চার লাখ টন গম আমদানি হয়। বেসরকারি সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, নাবিল গ্রুপসহ কয়েকটি গ্রুপ এই গম আমদানি করে।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]