বর্তমানে টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে চিত্রনায়িকা শিরিন শিলার চুমুকাণ্ডের ঘটনা। প্রকাশ্যে তাকে জড়িয়ে ধরে ভক্তের চুমু দেওয়ায় রীতিমতো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাকে ভালোবেসেই বিশ্বাস করেছিলেন বলে জানান শিরিন।
অভিনেত্রী বলেন, ওই ভিডিওটা ভাইরাল হওয়ার পর অনেক ইউটিউব ভাইয়েরা ওই ছেলেটার বাসায় গিয়ে তার অনেক সাক্ষাৎকার নিয়েছে। সে তাদের কাছে কিছু সত্য বলেছে, কিছু মিথ্যা বলেছে। এখন দর্শকদের কাছে আমার প্রশ্ন, তার কথাবার্তা, যা হয়েছে সবকিছুই তার মনে আছে। সেগুলো দেখে কী আপনাদের মনে হয় যে, সে একজন পাগল?
শিরিন শিলা আরও বলেন, সব ঠিক আছে, শুধু তার চেহারা দেখলে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন ও প্রতিবন্ধী মনে হয়। যেটা দেখে আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম, তার এই লুকস দেখেই বুকে টেনে নিয়েছি। প্রথম দিন আমার কাছে যখন এসেছে, তার এই চেহারা, তার এই সরলতা, সে যেভাবে কথা বলে, তার এই আচরণ দেখেই আমি মনে করেছিলাম, যে ছেলেটা খুবই সহজ সরল। তখনই কিন্তু তাকে আমি কাছে টেনে নিয়েছিলাম তাকে। আর আমি কিন্তু তাকে জড়িয়ে ধরিনি, সেই আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমি বরং বিব্রত হয়েছি, যেহেতু আমি এজন অভিনেত্রী। কিন্তু হাসিমুখে বিষয়টাকে ঢেকে দিয়েছি।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেন নায়িকারা ভীষণ অহংকারী হয়, আমি চাইনি আমার কাছে এই কথাটা আসুক। সে বলেছে তার মা নাই, মার সঙ্গে বসে কখনও খায়নি। আমি কিন্তু তাকে বাবাও বলেছি, ভালোবেসেছি। আমার কাঁধে যখন মাথা রেখেছে আমি কিন্তু তখন কোনো প্রতিবাদও করিনি।
শিরিন শিলা বলেন, বিব্রত হলেও হাসিমুখে মেনে নিয়েছি। এরপর সে যখন চুমু দিয়েছে তখনও আমি কোনো প্রতিবাদ করিনি। ইউটিউব ভাইরা গিয়ে বিভিন্ন তথ্য নিয়েছে। সব থেকে বড় জিনিস আমি ওর জন্য ১০ হাজার টাকা রেখেছিলাম। যেহেতু আমি জানি যে, ও একজন অসহায় মানুষ তার বাবা-মা কেউ পৃথিবীতে বেঁচে নেই, তাই তাকে ডেকে নিয়ে আসি, যে টাকাটা ওকে দিব। আমার গাড়িতে ঘুরাব, যেহেতু সে চড়তে চেয়েছিল। তাকে খাওয়াবো এটাই ছিল আমার প্ল্যান। তাকে নিয়ে একটি ভিডিও বানাবো। আমার ইউনিটের লোক তার বাসায় গিয়ে দেখলো তার বউ আছে, মা আছে। তখন তাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কেন মিথ্যা কথা বললা? বলে আমাকে মাফ করে দেন। আমি আপনাকে পছন্দ করি, টিভিতে দেখেছি। পরে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি আমাকে জড়িয়ে কেন ধরেছ? সে বলে, পছন্দ করি তাই। বললাম চুমু কেন দিয়েছ? সে বলে মাফ করে দেন আমাকে।
অভিনেত্রী আরও বলেন, সে কিন্তু তার ভুল স্বীকার করে আমার কাছে মাফ চেয়েছে। আমি তাকে ক্ষমাও করে দিয়েছি। যেহেতু এটা এখন বড় ইস্যু হয়ে গেছে, তাই ইউটিউবাররা এটাকে একটা পলিসি হিসেবে তৈরি করেছে বিজনেস করার জন্য। যেহেতু সে গরিব মানুষ, তাকে দেখে সবার মতো আমারও মায়া লেগেছে। এখন সব সহানুভূতি তার দিকে চলে গেছে। কেউ পজিটিভলি দেখছে, কেউ নেগেটিভলি। আবার কিউ বলছে সরলতার পরিচয় দিয়ে ভালোবেসে ভুল করেছি। তাকে এতোটা প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হয়নি। তাকে বিশ্বাস করা ঠিক হয়নি আমার।
পরে আমি জানতে পারি সে আমার সঙ্গে মিথ্যা প্রতারণা করেছে। মূলত হাসির ছলেই ভিডিও করা হয়েছিল এবং পোস্ট করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা এভাবে ভাইরাল হবে সেটা বুঝতে পারিনি।
অশ্রুসিক্ত হয়ে শিরিন শিলা বলেন, আমার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। এটা আমি যতটা সুন্দর ভাবে গ্রহণ করেছিলাম, এখন এটা তার থেকে বেশি খারাপ ভাবে ইফেক্ট পড়ছে। এই যে ইউতিউব ভাইরা এটাকে নোংরাভাবে প্রেজেন্ট করছে, সেটা আমি কখনও আশা করিনি। আজকে একটা সহজ সরল ছেলেকে নিয়ে মজা করছেন, কিন্তু একটাবারও কি আপানারা চিন্তা করেছেন, সে যে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিল। আমি তো তাকে ভালোবেসে বিশ্বাস করেছিলাম কিন্তু, সেটার কি মর্যাদা রাখলো।
সে আমাকে মিথ্যা কথা বলেছে, তার জীবিত মাকে মৃত বানিয়েছে, আর আপনারা এটাকে নিয়ে মজা করছেন। আমি কিন্তু তাকে বলিনি তুমি আমার পা ধরে মাফ চাও। সেই আমার পা ধরে বলেছে, আপু আমাকে মাফ করে দেন। আমি আর এরকম ভুল করব না। আমি কিন্তু তাকে মাফ করে দিয়েছি। এটাকে এখন তারা ইস্যু তৈরি করে নোংরাভাবে প্রেজেন্ট করতেছে। এটা কখনও আপনাদের কাছ থেকে আশা করি নাই।
ছেলেটা কি অন্যায় করিনি একটুও? সে কি আমার সঙ্গে মিথ্যা কথা বলে নাই। সে কি আমাকে ছোট করে নাই। যদি দেখতাম সে সত্যি মানসিকভাবে অসুস্থ, অসহায় তাহলে আমি কখনই ছোট হয়েছি ভাবতাম না। যখন দেখলাম সে মিথ্যা বলে আমাকে চুমু দিয়েছে তখন আমার নিজের কাছে খারাপ লেগেছে বিষয়টা। আমি এটা মানতে পারিনি। তখন তাকে বলেছি, যে আমি তোমাকে ক্ষমা করব না। তোমাকে পুলিশের কাছে দিব। তাকে এটা বলেছি ভয় দেখানোর জন্য। তাকে কিন্তু আমি পুলিশেও দেই নাই, মারধরও করিনি।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]