
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত ভর্তির আগে ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ পরীক্ষায় ফল পজিটিভ এলে ওই শিক্ষার্থীকে ভর্তির অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে। চলতি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ‘মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই’- মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে চবির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
রবিবার (৫ মে) চবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন’স কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে বেলা ১১টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এতে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন উপস্থিত ছিলেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের চবিতে চূড়ান্ত ভর্তির আগে ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সভা শেষে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের গণমাধ্যমে বলেন, মাদক আমাদের সমাজ, পরিবার ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। তাই আমরা এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রথমে যারা সফলভাবে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদের ডোপ টেস্ট করা হবে। তারপরে আমরা পর্যায়ক্রমে আমাদের অন্যান্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মীদের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ধীরে ধীরে এর আওতায় আনব।
উপাচার্য বলেন, এই প্রক্রিয়া শুরু করতে আমরা চমেক হাসপাতালের মেডিসিনের ডিনের সঙ্গে কথা বলেছি। কে এই খরচ বহন করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আমরা একটি সীমা ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি বছর থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। নতুন যারা ভর্তি হবে, সবাইকে ডোপ টেস্ট দিতে হবে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ টেস্ট নেবেন।
চবিতে স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ২ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক ভর্তি শুরু হয়েছে গত ২৮ এপ্রিল। চূড়ান্ত ভর্তি এখনো শুরু হয়নি। কয়েক ধাপে আগামী এক মাস পর্যন্ত ভর্তি চলবে।
ডোপ টেস্ট সম্পর্কে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, গাঁজা সেবনের ছয় মাস পর্যন্ত ডোপ টেস্টে শনাক্ত করা যায়। তবে যারা একবার বা দুইবার সেবন করেছেন, তাদের শনাক্ত হয় না। এর বাইরে অ্যালকোহল বা অন্য কোনো মাদকদ্রব্য সেবনের তিনদিন পরে আর ডোপ টেস্টে শনাক্ত করা যায় না।
২০১৯ সালে পাঁচ ধরনের মাদকদ্রব্য পরীক্ষার জন্য পরিপত্র জারি করেছিল সরকার। এর মধ্যে আছে- বেনজোডায়াজেপিন (ঘুমের ওষুধ), অ্যামফেটামিন (ইয়াবা), অপয়েটস (হেরোইন, মরফিন, কোকেন), ক্যানাবাইনয়েডস (গাঁজা) ও অ্যালকোহল (মদ)। প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা করে দুই তিন ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল জানিয়ে দেয়া সম্ভব।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]