ময়মনসিংহের ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। আগামী তিনদিনের মধ্যে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের।
মঙ্গলবার দুপুরে বহিস্কারের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
আন্দোলনকারীদের দাবি বিনা অপরাধে আইন বিভাগের আব্দুল্লাহ আল ওয়াহিদ, তারেক রহমান ও হাবিবুল্লাহ জামিকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। তার বহিস্কার আদেশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলে নেয়ার আল্টিমেন্টাম দেয়া হয়। তুলে না নিলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জল কুমার প্রধান সঠিক বিচারের আশ্বাসে সাধারন শিক্ষার্থীরা মানবন্ধন শেষ করে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
গত সোমবার রাত ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৫-১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলামের উপর হামলা করার কারনে শৃংখলা বোর্ডের সুপারিশের পরিপেক্ষিতে কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৭-১৮ ব্যাচের তিন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাহিরে মারামারির ঘটনায় আব্দুল্লাহ আল ওয়াহিদ, তারেক রহমান ও হাবিবুল্লাহ জামিকে বহিস্কার করেন।
বহিস্কিত শিক্ষার্থী তারেক রহমান জানান, আমি পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী আমার গায়ে হাত তুলে। পরীক্ষার হলে থাকা স্যারের সামনে আমাকে হেনস্তা করে তুলে নিয়ে যেতে চায়। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দরজা আটকে দেয়। এর পর গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা চিকনা মোড় থেকে আমাকে তারা দুইজন শেখ রাসেল ক্লাবে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে। যদি প্রশাসন আমাকে বিনা অপরাধে বহিস্কার করে তাহলে ছাত্রলীগের নেতারা অপরাধ করেও বহিস্কার হয়নি। আমি মারামারির কোন ঘটনায় সাথে জাড়ত ছিলাম না। আমাকে তারা প্রতিনিয়ত মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে।এর আগে প্রক্টর স্যারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর উজ্জল কুমার প্রধান জানান, ঐ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের প্রত্যক্ষদর্শী ১৫ জন শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ড এ বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। তদন্ত কমিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এএইচ মোস্তাফিজুর বলেন, মারামারির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের শোকজের জবাবের প্রেক্ষিতে শৃংখলা বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কোন তদন্ত কমিটি করা হয়নি।
উল্লেখ্য গত ০৪ই সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সিনিয়র জুনিয়রদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দুপক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। এঘটনার পর দিন আবারও উভয় পক্ষের মারামারির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ই সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শৃংখলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন বিভাগের তিন শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়।
বিবার্তা/নোমান/ইমরান
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]