শিরোনাম
রানি এলিজাবেথ সম্মাননা পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৫০
রানি এলিজাবেথ সম্মাননা পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রানি এলিজাবেথ সম্মাননা পেলেন কানাডা অভিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম। রবিউল আলমের কাজের মূল্যায়নস্বরূপ তাকে রানি প্রদত্ত 'QEII Platinum Pin Honour' অর্থাৎ ‘প্ল্যাটিনাম জুবিলি’ পুরস্কার প্রদান করা হয়।


ভ্যাংকুভারের ইভল্যানার শহরের ডেলটা হেরিস বার্ন হলে এই সম্মাননা এবং প্লাটিনাম পিন প্রদান করেন বৃটিশ কলম্বিয়ার কর্মসংস্থান, কর্মশক্তি উন্নয়ন ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রী কারলা কুয়ানট্রো।


রবিউল আলম সমাজে স্বেচ্ছাসেবায় বিরল ভূমিকা পালনের জন্য সংসদ সদস্যদের কর্তৃক এই সম্মানে মনোনীত এবং পুরস্কৃত হন। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদানকালে মন্ত্রী কারলা কুয়ানট্রো রবিউল আলমকে অভিনন্দন জানিয়ে কমিউনিটিতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে রবিউল আলমের স্ত্রী মেডেলিনা হিলারি উপস্থিত ছিলেন।


তিনি ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ১৯৬২-৬৩ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন রবিউল আলম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে ১৯৬৪ সালে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য প্রথমে ইংল্যান্ড ও পরবর্তীতে কানাডা গমন করেন। সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি কানাডায় উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করলেও নানামুখী সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। ১৯৭১ সালে কানাডায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন তিনি।


উল্লেখ্য, রবিউল আলমের ছোট ভাই রশিদুল আলম যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ছাত্রাবস্থায় রশিদুল আলম ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে নির্বাচিত জিএস ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। কর্মজীবনে তিনি সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। বিএনপি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই তাকে বাধ্যতামূলক অবসরের মাধ্যমে চাকুরিচ্যুত করে।


রশিদুল আলম পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে ফলিত গণিতের প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই তিনি ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। এরপর ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেও তিনি সামনের সারিতে ছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরূদ্ধে কারফিউ ভঙ্গ করে রাজপথে নামেন। তিনিই প্রথম পাকিস্তানী পতাকায় আগুন দেন। ছাত্রাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।


ভারতের দেরাদুন থেকে প্রথম ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দেন। কুষ্টিয়া বিএলএফ জেলা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তানী হানাদার এবং তাদের দোসর রাজাকার আলবদরদের আতংকের নাম ছিল তাঁর নেতৃত্বাধীন ইউনিট। তাঁর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া হানাদার মুক্ত হয়। একাধিক সম্মুখ সমরে তিনি নেতৃত্ব দেন। ৮ ডিসেম্বর এমনই এক সম্মুখ সমরে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সেই ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন।


রশিদুল আলম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


তাদের ছোট ভাই মাহবুবউল আলম হানিফ ২০০৯ সাল থেকে টানা চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য। ১৯৯৬ সালে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামাড়া) আসন থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হিসেবে অংশ গ্রহণ করেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। মাহবুবউল আলম হানিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ঢাকা কলেজে পড়াকালীন সময়ে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। তিনি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানা আওয়ামী লীগের সদস্য, এরপর কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্বও পালন করেছেন।


বিবার্তা/বিএম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)

১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,

বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com