দিনাজপুরে লাভের আশায় 'রেড লেডি হাইব্রিড জাতের' পেঁপে চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। মড়ক ধরা পেঁপে গাছে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মতো বালাই নাশক ও ওষুধ প্রয়োগ করেও নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও পরিপূর্ণতা পাচ্ছে না গাছ, ধরছে না ফল।
লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের নার্সারি থেকে উচ্চমূল্যে এসব পেঁপে চারা ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।
তাইওয়ানের 'রেড লেডি জাতের' প্রতিটি পেঁপে গাছ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ১২০টি ফল পাওয়া যায়। অত্যন্ত আকর্ষণীয় সুস্বাদু জাতের এ পেঁপের বাজারে চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৮-৯ মাসের মধ্য। এই জাতের পেঁপে রিং স্পট ভাইরাস রোগ সহনশীল। এই জাতের জীবনকাল ২ বছরের অধিক। বাংলাদেশের আবহাওয়াতে এ জাতের পেঁপে চাষ উপযোগী। অনেক স্থানে এ পেঁপের চাষ হচ্ছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, শহরের কলেজ মোড়, দশমাইল মোড়সহ জেলার বেশ কিছু স্থানে সাইনবোর্ডে এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা-ব্র্যাক।
সেই সংস্থার নার্সারি থেকে বীজ নিয়ে কৃষক মুজতাহিদ আলী বাবু রেড লেডি জাতের পেঁপে চারা ক্রয় করেছেন। সদর উপজেলার শেষ সীমানা বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়নের ত্রিমোনী ডাঙ্গা এলাকায় দুই একর জমিতে গড়েছেন শখে’র বাগান। কিন্তু, পেঁপে গাছে মড়ক ধরেছে। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও পরিপূর্ণতা পাচ্ছে না গাছ, ধরছেনা ফল। এনিয়ে বিপাকে পড়েছেন মুজতাহিদ আলী বাবু।
তিনি জানান, ব্র্যাক এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শে পেঁপে বাগানে অনেক ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করেছি। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করেও কোনো ফল পাচ্ছি না।
শুধু কৃষক মুজতাহিদ আলী বাবু নয় দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও জেলার অসংখ্য কৃষক প্রতিটি চারা ২৫ টাকা দরে রেড লেডি জাতের পেঁপে বাগান করে বিপাকে পড়েছেন।
সমিতি’র সভাপতি মো.আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ তারা ব্র্যাক থেকে রেড লেডি পেঁপে চারা ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন। তাদের তাইওয়ানের রেড লেডি জাতের চারা না দিয়ে দেয়া হয়েছে; চায়না রড লেডি জাতের চারা পেঁপে চারা। তাই, ব্র্যাক তাদের ক্ষতিপূরণ দিবে এমনটাই দাবি করছি আমরা।
এখন আর কিছুই করার নেই, এমন মন্তব্যের পাশাপাশি পরিচর্যা বন্ধ করে দিয়ে তা বীজ বাহিত ভাইরাস জনিত রোগ বলে দাবি করছেন বিরল উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো.জজিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এখন আর কিছুই করার নেই, যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে আর কোনো লাভ হবে না। এটা বীজ বাহিত ভাইরাস জনিত রোগ।
ভাইরাস জনিত রোগের কারণে এমনটা হয়েছে বলে সত্যতা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত বেসরকারি সংস্থা (ব্র্যাক)’র নার্সারি ম্যানেজার কৃষিবিদ মো. মামমুদুল হাসান।
তিনি বলেন, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যা পেয়েছি, তাতে আর কিছুই করার নেই। ভাইরাস জনিত রোগের কারণে এমনটা হয়েছে। এ রোগ প্রতিকারের কোনো উপায় নেই আর।
লাভের আশায় পেঁপে বাগান করে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
বিবার্তা/শাহী/আকবর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]