পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন মাইনুদ্দিন সর্দার (২৬) নামে এক যুবক। সোমবার ভোরে চাঁদপুর সদর উপজেলার দেবপুর গ্রামে তাদের বাড়ি থেকে চার জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে (২৫), কন্যা মিথিলা ফারজানা (৫) ও পুত্র সিয়াম (১)। এদের মধ্যে স্ত্রীকে বিষ পান করিয়ে এবং দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্বামী মাইনুদ্দিন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি নাসিমউদ্দীন জানান, মাইনুদ্দিন সর্দার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে থাকতেন। এ কারণে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতো।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে ফিরে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে দেবপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান তিনি। রবিবার রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে মাইনুদ্দিন প্রথমে দুই মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর স্ত্রীকে শ্বাসরোধ ও মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যা করে। পরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করে।
সোমবার সকালে নিহতদের মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত মাইনুদ্দিনের মা ফিরোজা বেগম জানান, গত কয়েকদিন আগে মাইনুদ্দিনের স্ত্রীর কানের দুল হারিয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এরপরে মাইনুদ্দিন চট্টগ্রাম তার কর্মস্থলে চলে যায়। তার স্ত্রীকে তার পিতা গিয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলার করবন্দ গ্রামে পিত্রালয়ে নিয়ে যায়। স্ত্রী কেন শ্বশুর বাড়িতে চলে গেছে, এ নিয়েও মাইনুদ্দিন স্ত্রীকে গালাগালি করে।
মাইনুদ্দিনের বড় ভাই কালাম সরদার জানান, শনিবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ীতে আসে। পরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আসে। শ্বশুরবাড়িও কথা কাটাকাটি হয় হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণের গহনা নিয়ে।
সোমবার ভোর ৪টার দিকে মাইনুদ্দিনের আরেক বড়ভাই জসিম উদ্দিন (মালয়েশিয়া প্রবাসী) মা ফিরোজা বেগমকে ফোন দেন। মাকে বলেন, মাঈনুদ্দিন তার ফেসবুকে সে মরে যাবে তার কবর ঠিক করার জন্য এবং স্ত্রী, সন্তানদের ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড দিয়েছে। জসিম মা ও ভাইকে তার ঘরে গিয়ে দেখার জন্য বলে।
পরে মা ফিরোজা বেগম ও ভাই কালাম সরদার ঘরে গিয়ে দরজা খুলে প্রথমে দুই শিশুকে লেপের নিচে মৃত পড়ে থাকতে দেখেন। মাইনুদ্দিনকে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। তারা চিত্কার করলে বাড়ির লোকজন আসে। খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পুকুরে খুঁটির মধ্যে ফাতেমার লাশ বাধা অবস্থায় দেখেন।
বিবার্তা/হাসান/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]