শিরোনাম
কলারোয়ায় ইউএনও পরিচয়ে বিকাশে টাকার দাবি
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:২৩
কলারোয়ায় ইউএনও পরিচয়ে বিকাশে টাকার দাবি
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সাতক্ষীরার কলারোয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে বিকাশে টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গল ও বুধবার কিছু অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে এই টাকা দাবির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে এ বিষয়টি ভুয়া বলে অবহিত করে সবাইকে সচেতন ও সজাগ থাকার তাগিদ দেয়া হয়েছে।


একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, কখনো কলারোয়ার ইউএনও’র মোবাইল নম্বর, আবার কখনো কোনো সচিবের নাম ব্যবহার করছে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে বিকাশে টাকা চাওয়া হচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে, কলারোয়া ইউএনও’র মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ও কণ্ঠস্বর নকল করে টাকার বিনিময়ে ল্যাপটপ দেয়ার জন্য এক শ্রেণির প্রতারক চক্র মঙ্গলবার ও বুধবার ফোন দিয়েছে।


উপজেলার সরসকাটি হাইস্কুল, কাজীরহাট গার্লস হাইস্কুল, সাতপোতা রহিমা বালিকা বিদ্যালয়, ছলিমপুর হাইস্কুল, মুরারীকাটি হাইস্কুল, বদরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফোন করে অনুরূপভাবে টাকা বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে।


গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ দেয়ার কথা বলে টাকা বিকাশ করার নামে প্রতারণা ফাঁদ ফেলার প্রক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।


সাতপোতা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের কাছে ০১৭২২-৬০৫৯৭৮ নম্বর থেকে ফোন করে বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে। ইউএনও’র উদ্ধৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়- ‘৫৮হাজার টাকার ল্যাপটপ দেয়া হবে। এজন্য ৮হাজার টাকা বিকাশে দিতে হবে।’ তখন প্রধান শিক্ষক ৫হাজার টাকা দিতে রাজি হলে মোবাইলের অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়- ‘টাকাটা বিকাশ করে বিকেলে ইউএনও’র বাসায় দেখা করবেন।’ বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সন্দেহ হলে তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখেন বিষয়টি ভুয়া।


বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাজীরহাট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সামছুল হকের কাছে প্রথমে ০১৭২২-৬০৫৯৭৮ নম্বর থেকে নিজেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে তার নম্বর আছে কিনা বললে প্রধান শিক্ষক বলেন, নেই। তখন বলা হয় শিক্ষা অফিসার আমার পরিচয় দিয়ে দেবেন। দ্বিতীয়বার ০১৭১৭-২৩৯৯৮৯ নম্বর থেকে শিক্ষা অফিসারের পরিচয় দিয়ে (যদিও সেটা শিক্ষা অফিসারের কণ্ঠস্বর নয়) ফোন দিয়ে ইউএনও’র কথা বলা হয়। তৃতীয়বার ০১৭০৯-৩১৯৭৩৯ নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়- ‘আপনি সরকারি ল্যাপটপ পেয়েছেন কিনা।’ প্রধান শিক্ষক তখন বলেন যে- ‘স্কুলে পেয়েছেন।’ তখন অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়- ‘প্রধান শিক্ষকের জন্য ব্যক্তিগত ল্যাপটপ দেয়া হবে। এজন্য বিকাশে টাকা দেন।’ বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় প্রধান শিক্ষক সামছুল হক সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতনদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে ভুয়া ও প্রতারণা বলে নিশ্চিত হন।


লাঙ্গলঝাড়া কেএল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের কাছেও ০১৯৬৪-১১৫২২৬ নম্বর থেকে টাকা বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে।


খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সরেজমিনে কলারোয়া ইউএনও’র কার্যালয়ে গিয়ে ইউএনও’র সরকারি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিস সুপারভাইজার ইউএনও’র মোবাইলটি আলমারিতে বন্ধ অবস্থায় দেখান। তিনি জানান যে, স্যারের নম্বরটি সম্ভবত ক্লোন করা হয়েছে।


ইউএনও অফিসের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল মান্নান বলেন, এ বিষয়ে কলারোয়া থানায় জিডি করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।


উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল হামিদ বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। প্রতারণার ঘটনাটি সত্য। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে ভুয়া ও প্রতারণা ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য সজাগ থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


এদিকে, অনেক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে অনুরূপভাবে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে বিকাশে টাকা চাওয়া হলেও কেউ টাকা দিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


বিবার্তা/শহীদুল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com