শিরোনাম
উদ্বোধনের আগেই সেতুর সংযোগ সড়কে ধস
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:৪১
উদ্বোধনের আগেই সেতুর সংযোগ সড়কে ধস
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

উদ্বোধনের আগেই ধসে গেলো টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ঝিনাই নদীর ওপর নবনির্মিত সেতুর সংযোগ সেতু। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তদারকির অভাব ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিন্মমানের কাজের ফলে এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।


স্থানীয়দের উদ্যোগে ধসে পড়া সংযোগ সড়কের স্থলে প্রথমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। তবে পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ নিজ উদ্যোগে কাঠের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছেন। বর্তমানে ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।


এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ফতেপুর ইউনিয়নের পারদীঘি এলাকার পারদীঘি খেয়াঘাটে ৯৯ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ দশমিক ৩০ মিটার প্রস্থের একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ২২ লাখ ৭১ হাজার টাকা। টাঙ্গাইলের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সেতুটি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে।


পরবর্তীতে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্ট ট্রেডকে ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর এ সেতুর কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ শেষ করতে না পারায় দুই দফায় সময় বৃদ্ধি করে। সর্বশেষ গত ১৫ জুন সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার জুলাই মাসের শেষের দিকে সেতুটির মূল কাজ শেষ করে। এরপর সেতুর দুইপাশে গাইড ওয়াল (দেয়াল) নির্মাণের পর সেতুর কাছে নদীর তলদেশ থেকে খনন যন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে বালু উত্তোলন করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্ষার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেতুটির উত্তর পাশের সংযোগ সড়কটি ধসে যায়। স্থানীয় লোকজন ধসে যাওয়া স্থানে পূর্বপাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল শুরু করেন। অপরদিকে এ সেতুটির দাবীদার সুতানরি ও পারদীঘি গ্রামে রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী। তারা ফতেপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে।


ফতেপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, পারদীঘি গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন ও সুরুজ খান বলেন, ঠিকাদার সেতুটিতে নিন্মমানের কাজ করেছেন। ফলে সেতু উদ্বোধনের আগেই সংযোগ সড়ক ধসে পড়েছে। সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় এলাকাবাসী প্রথমে সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো দেয়। এতে বেশি ঝুঁকি থাকায় ঈদের আগে ওই সাঁকোর পশ্চিম পাশে ইউপি চেয়ারম্যান কাঠ ও বাঁশ দিয়ে পুনরায় সাঁকো বানিয়েছেন। ওই সাঁকোর নিচ থেকেও মাটি সরে গেছে। এর ফলে লোকজন এখন ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে।


ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ জানান, এ এলাকা দিয়ে উপজেলার ফতেপুর ও মহেড়া ইউনিয়নের লোকজনসহ পার্শ্ববর্তী বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি আগামী নভেম্বর মাসে উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু উদ্বোধনের আগেই সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।


এ প্রসঙ্গে মির্জাপুর উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, সেতুটির কাজ আগের ডিজাইন মোতাবেক শেষ হয়েছে। নদী ভাঙনের কারণে সেতুটির উত্তরপাশ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গাইড ওয়ালের পাশ থেকে সংযোগ সড়কের মাটি সরে গেছে। সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পুনরায় ডিজাইন করে এলজিইডি ঢাকার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুন ডিজাইন অনুমোদন হয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com