শিরোনাম
নওগাঁয় লাইসেন্সবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০১৮, ১৮:৫৮
নওগাঁয় লাইসেন্সবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নওগাঁর আত্রাইয়ে গ্রামের মানুষের অন্ধ বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোন লাইসেন্স ছাড়াই স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় উপজেলার ভবানীপুর বাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার।


অনুসন্ধানে জানা যায়, রোগ নির্ণয়ে অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার রয়েছে এবং অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কথা প্রচার করে ও সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা দিয়ে গড়ে ওঠা এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই কোনো নির্দিষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন প্যাথলজিস্ট। আণবিক শক্তি কমিশনের পরীক্ষা ছাড়াই পুরনো এক্স-রে মেশিন দিয়ে অদক্ষ ঝুঁকিপূর্ণভাবে রোগের পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত রোগীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ভুল ফিটনেস কার্ড।


এ ছাড়াও ব্যবসার উদ্দেশ্যে নির্মিত অবৈধ থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক এটিএম মামুনুর রশিদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। ফলে প্রায় প্রতিদিনই অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে হাজারো রোগী। নিয়মনীতি ছাড়াই অনুমোদনহীন এই প্রতিষ্ঠানে নিজেই অভিজ্ঞ এবং দক্ষ চিকিৎসক দাবি করে জটিল রোগের পরীক্ষা ও সেবার কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।


এদিকে স্বাস্থ্যসেবা মহাপরিদফতরের মতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সবসময় অন্তত একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বা চিকিৎসা-প্রযুক্তিবিদ থাকার কথা থাকলেও থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নিজেই চিকিৎসক সেজে রোগীর চিকিৎসা করেন। আবার একই ব্যক্তি রক্ত সংগ্রহ করে সে নিজেই আবার সেগুলোর পরীক্ষা করছে। তিনিই আবার সেই পরীক্ষার রিপোর্টসহ হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে অসংখ্য ঔষধের প্রেসক্রিপশন।


অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, এই থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এটিএম মামুনুর রশিদ সোহাগ পূর্বে নওগাঁর কোন এক ক্লিনিকে কম্পাউন্ডার হিসাবে কাজ করতেন। ওই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি প্রায় এক বছর ধরে নিজেকে বড় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তার সাজিয়ে থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে রোগীদের অপচিকিৎসা দিয়ে আসছেন।


এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রতারক মামুনুর রশিদ সোহাগের অপচিকিৎসায় দুরারোগ্যব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার একাধিক ঘটনাও আছে।


এ ব্যাপারে থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক এটিএম মামুনুর রশিদ সোহাগের চিকিৎসা প্রদানের যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিজেই তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি বলে দাবি করেন। তিনি একজন চিকিৎসক হিসাবে দাবি করলেও পল্লী চিকিৎসকের সনদ ব্যতীত তার কোনো সনদপত্র দেখাতে পারেনি।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সানাউল ইসলাম জানান, আত্রাইয়ে আমি কয়েক দিন হলো যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. মো. মুমিনুল হক জানান, আমি গত বুধবার থ্রি-ষ্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেছি। এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোন লাইসেন্স নেই। মামুনুর রশিদ সোহাগ নিজেকে একজন চিকিৎসক হিসাবে দাবি করলেও পল্লী চিকিৎসকের সনদ ব্যতীত এমনকি শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রও দেখাতে পারেনি। আমি এই অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ করতে বলেছি।


এদিকে এই প্রতারকের হাত থেকে বাঁচতে এলাকার সচেতন মহল দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


বিবার্তা/নয়ন/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com