শিরোনাম
ম্যাক্স হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০১৮, ১৫:৫৬
ম্যাক্স হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামে ম্যাক্স হাসপাতালের রোগ নিরূপণ কেন্দ্রে (ল্যাব) কোনো পরীক্ষা না হলেও প্রতিদিন প্রচুর রিপোর্ট ডেলিভারি হয়। এসব রিপোর্টে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিলও থাকতো।


র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সারওয়ার আলমের রবিবার চালানো অভিযানে অভিনব জালিয়াতি ও প্রতারণার চিত্র ধরা পড়ে।


এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি ডা. দেওয়ান মোঃ মেহেদি হাসান, ওষুধ প্রশাসন চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক গুলশান জাহান প্রমুখ।


সারওয়ার আলম বলেন, ইতোমধ্যে ম্যাক্স হাসপাতালে কিছু অসঙ্গতি পেয়েছি। হাসপাতালটির নিজেদের ল্যাবে কোনো টেস্ট হয় না। বিভিন্ন টেস্টের জন্য তারা নমুনা সংগ্রহ করে বাইরের হাসপাতাল থেকে টেস্ট করিয়ে নিয়ে আসে। আর সেসব টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয় হাসপাতালটির নিজস্ব প্যাডে।



তিনি বলেন, বেশির ভাগ পরীক্ষার রিপোর্ট এপিক হেলথ কেয়ার, ল্যাব এইড, পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারসহ বাইরের ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে করে আনা। তারা বাইরে থেকে রোগ নির্ণয় করে আনলেও তাদের নিজের নামে চালিয়ে দিতো। এমনকি যে চিকিৎসক রিপোর্টটি তৈরি করতো তার সই না দিয়ে অন্য চিকিৎসকের সই থাকত।


তিনি আরো জানান, কিছু কিছু রিপোর্টের স্যাম্পল তারা বিদেশেও পাঠিয়েছেন। সাধারণত কোনো স্যাম্পল বিদেশে পাঠাতে হলে সরকারের অনুমতি লাগে। এক্ষেত্রে তারা অনুমতি নেয়নি। যেটা সম্পূর্ণ বেআইনী।


সারোয়ার আলম বলেন, একজন নমুনা সংগ্রহ করছে, অন্যজন পরীক্ষা করছে আবার অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে অন্য জায়গায়। এভাবে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে ম্যাক্সের ল্যাবে। এগুলো আসলেই পরীক্ষা হয়েছে কি না সেটাই তো নিশ্চিত না।


তিনি বলেন, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবে এইচএসসি পাস লোকজন চাকরি করছে। এখানে অন্তত স্নাতক ডিগ্রিধারী বা বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্নদের কাজ করার কথা। একটা হাসপাতাল চালাতে হলে অবশ্যই নমুনা পরীক্ষার নিজস্ব ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেটা তাদের নেই।


পুরো হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পর্যবেক্ষণ করে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।



গত ২৮ জুন বিকালে গলা ব্যাথার কারণে দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাফিদা খান রাইফাকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২৯ জুন রাতে রাইফার মৃত্যু হয়।


চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে রাইফার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক, নার্সদের শাস্তি দাবি করেন সাংবাদিক নেতারা।


ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে।


সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়, যাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।


বিবার্তা/জাহেদ/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com