সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এর বিচারক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে তার গ্রামের বাড়ির গৃহপরিচারিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। তাকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ করে গৃহপরিচারিকা এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব কথা তুলে ধরেছেন।
এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় বিচারক হারুন অর রশিদ প্রভাব খাটিয়ে মেয়েটির বাবা ও ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজির মামলা করিয়ে তাদেরকে জেল খাটাচ্ছেন। এমন কি তার সহযোগীদের দিয়ে মেয়েটির বাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদ টেলিফোনে বলেন, ওই নামের কোনো মেয়েকে আমি চিনি না। তার অভিযোগও সত্য নয়। এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন।
মঙ্গলবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে গৃহপরিচারিকা (মুক্তা খাতুন) জানান, সাতক্ষীরার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশীদ ও তার বাড়ি একই গ্রাম খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনায়। সেই সুবাদে গত তিন বছর যাবত তিনি তার বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসেবে মাসিক ৫০০ টাকা বেতনে কাজ করে আসছেন।
মুক্তা খাতুন জানান, হারুন অর রশীদ তার চাকরীস্থল থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার করে বাড়ি আসতেন। বাড়িতে এসে সুযোগ বুঝে তিনি তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর প্রতিবাদ করে কাজ করতে না চাইলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, বিষয়টি কাউকে জানালে তার পরিবারকে জেল খাটাবেন তিনি। এই হুমকির কয়েক দিনের মাথায় হারুন অর রশীদ তার আত্মীয় তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের সাজ্জাত হোসেনকে দিয়ে তারই আদালতে একটি মামলা করান।
গৃহপরিচারিকা জানান, এই মামলায় আসামি করা হয় আমার বাবা আবুবকর মোড়ল, ভাই শরিফুল ইসলাম ও বোন ইরানী পারভিনকে। গত ১৯ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদের আদালতে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলা করা হয়। এই মামলায় আবুবকর ও তার ছেলে শরিফুল এখনো জেলে রয়েছেন। বুধবার মামলার ধার্য দিন বলেও জানায় গৃহপরিচারিকা।
কাজের মেয়ে ও তার মা ফরিদা বেগম সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, নানাভাবে প্রতিবাদ করতে থাকায় হারুন অর রশিদ তার সহযোগীদের দিয়ে তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গেচুরে দিয়েছেন। এরপর থেকে তারা ভাঙ্গা ঘরের ওপর কাগজের ছাউনি দিয়ে কোনো মতে বাস করছেন। প্রায় একমাস ধরে হারুন অর রশিদের ভয়ে তারা বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন। প্রতিরাতে তাদের বাড়ির পাশে উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা আড্ডা দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এমনকি হারুন অর রশিদ এখন কাজের মেয়েটির বোন ঢাকায় অধ্যয়নরত ইরানী পারভিনকে খুঁজছেন পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, হারুন অর রশিদের আগে আরো দুটি বিয়ে করেছেন। বনিবনা না হওয়ায় তাদের একজনের সাথে মামলা চলছে হারুন অর রশিদের।
সংবাদ সম্মেলনের পর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব থেকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদের কাছে তার নম্বরে ফোন করা হয়। তিনি সরাসরি বলেন, অভিযোগকারীকে তিনি চেনেন না। তার অভিযোগও মিথ্যা। এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন।
বিবার্তা/আব্দুর রহমান/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]