শিরোনাম
জীর্ণ কক্ষ, জোয়ারের পানি; এর মধ্যেই চলে স্কুল!
প্রকাশ : ২১ মে ২০১৮, ১৫:৩৭
জীর্ণ কক্ষ, জোয়ারের পানি; এর মধ্যেই চলে স্কুল!
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ থাকলেও বেড়া নেই। যেটুকু আছে তাও একেবারে ভাঙাচোড়া। বলতে গেলে চারপাশই খোলা। তার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করেন শিক্ষার্থীরা।


কখনো আবার খোলা আকাশের নিচেও ক্লাস করতে হয় তাদের। কখনো বন্যা আশ্রয়ন কেন্দ্রেও। এলকেএইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয় নামক এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শিক্ষক সংকটও।


লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মোল্লারহাটে বিদ্যালয়টির অবস্থান। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১০৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৯৩ জন কৃতকার্য হয়েছে। এর আগে বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়টির পাশের হার ছিল শতভাগ।


নদীর কাছাকাছি হওয়ায় এখানে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার আগ্রহ কম। ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করতে অবিভাবকদের মধ্যেও অনীহা রয়েছে। এসব সংকট ও সমস্যা সঙ্গে লড়াই করে প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষকের আন্তরিকতায় চলছে এখানকার শিক্ষাব্যবস্থা।


লক্ষ্মীপুর শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সড়কের পাশেই মোল্লারহাট এলকেএইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৯৩ সালে ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। বর্তমানে ৬১৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮১ জনই ছাত্রী।


এত শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৬ জন। অথচ থাকার কথা অন্তত ১২ জন। তাই পাঠদানে হিমশিম খেতে হয় শিক্ষকদের। বিদ্যালয়ে ৮টি শ্রেণীকক্ষের মধ্যে ৫টি ব্যবহারের অনুপযোগী। শ্রেণীকক্ষের সংকটের জন্য শিক্ষার্থীদের বাইরে খোলা আকাশের নিচেও ক্লাস করতে হয়।


এর মধ্যে আবার জোয়ার আসলেই প্রতিনিয়ত পানি ওঠে বিদ্যালয়ে। মাঝে মধ্যে শ্রেণী কক্ষেও পানি ঢুকে যায়। এ অবস্থায় খেলাধুলা দূরে থাক, ক্লাস করাই দুরূহ হয়ে পড়ে।


বিদ্যালয়ের কক্ষের পাকা খুটিগুলো ভেঙে রডের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। একটি শ্রেণীকক্ষে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন একজন শিক্ষক। বৃষ্টি এলেই পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়। অন্য একটি কক্ষের চারপাশে কোনো বেড়া নেই। চারপাশ খোলা!


স্থানীয়রা বলেন, বিদ্যালয়টি উপকূলীয় অঞ্চলে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম। এ অঞ্চলের অধিকাংশ মৎস ও জেলে পরিবার। যার ফলে শিক্ষার্থীরা কাজ করে বেশি। তবে একটি ভবন নির্মিত হলে বিদ্যালয়টির একাধিক সমস্যা সমাধান হবে।


এলকেএইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান জানান, বিভিন্ন প্রতিকূলতা থাকা সত্বেও মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বেশ কয়েকবার সরকারি বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কাজের কাজ কোনোটাই হয়নি।


এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার সরিৎ কুমার চাকমা জানান, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। বরাদ্দ না থাকায় এসব নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। নতুন বরাদ্দ এলে বিদ্যালয়ের সংস্কারের কাজ করা হবে। দীর্ঘ দুই বছর নিয়োগ না থাকায় শিক্ষক সংকট রয়েছে। খুব শীঘ্রই এ সংকট নিরসন করা হবে।


বিবার্তা/সুমন/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com