শিরোনাম
এখনো শুরু হয়নি সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ
প্রকাশ : ২১ মে ২০১৮, ১৪:৫৯
এখনো শুরু হয়নি সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নড়াইলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে জেলার কৃষক-কৃষানীরা সেই ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে বাজারে ধানের দাম কম থাকায় হতাশ হয়ে পড়ছেন কৃষকেরা। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু না হওয়ায় খোলা বাজারে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকেরা। এতে লোকসানের মুখে পড়ছেন কৃষকরা।


কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলায় ৪০ হাজার ৯৫৭ হেক্টরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪৬ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ২২৮ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ বেশি হয়েছে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪০৪ মেট্টিকটন।


কৃষকেরা বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সারা দেশের সাথে নড়াইলের ২ মে থেকে ধান চাল সংগ্রহ করার কথা থাকলেও আজও সেই সংগ্রহ শুরু হয়নি। ফলে কৃষকেরা বাজারে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে কৃষকদের অভিযোগ ধান সংগ্রহ শুরু হলেও জেলার প্রান্তিক কৃষকেরা সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে পারে না। গুদামে সিন্ডিকেট করে ধান কেনা হয়।


কৃষকরা আরো বলেন, বর্তমানে বিল থেকে ধান কেটে গোলায় উঠানোর কাজ চলছে। একজন দিনমুজুরকে তিন বেলা খেতে দিয়ে দিনে ৬শ থেকে ৭শ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। সরকার যদি মৌশুমের শুরুতে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে তাহলে তার মতো শত শত কৃষক উপকৃত হতো।


পৌরসভার উজিরপুর এলাকার কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, একমন ধান উৎপাদন করতে ৭শ-সাড়ে ৭শ টাকা খরচ হয়। বর্তমানে বাজারে একমন ধান ৭’শ-৮’শ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এতে তাদের খরচও ঠিকমতো উঠছে না বলে তার মতো হাজারো কৃষকের অভিযোগ।


আমাদা গ্রামের কৃষক কাশেম ও বিজয়পুর গ্রামের কৃষক রতন কুমার জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কাজ করেন। প্রতি বছর তারা অনেক ধান বিক্রি করেন। কিন্তু তারা এ পর্যন্ত সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। তাদের মতো শত শত কৃষকের অভিযোগ, গুদামে ধান দিতে গেলে বিভিন্ন বাহানা করে তাদের ধান নেয়া হয় না। যারা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ম্যানেজ করতে পারে তাদের ধানই সরকার সংগ্রহ করে।


জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২ মে থেকে সারা দেশে ধান চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এ বছর প্রতি মন ধান এক হাজার ৪০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি কেনা হবে। তবে জেলা থেকে কত মন ধান সংগ্রহ করা হবে তার কোনো নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি।


নড়াইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মনোতোষ কুমার মজুমদার জানান, নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদেরকে দেয়া হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী তারা কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে। ধানের টাকা কৃষকদের নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়।


নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের নাম সংগ্রহ করে তালিকা করা হচ্ছে। প্রকৃত কৃষকেরাই এই তালিকাতে আছে। তবে জেলা থেকে আরো বেশি ধান সংগ্রহ করলে ভাল হয়।


বিবার্তা/শরিফুল/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com