শিরোনাম
বালু উত্তোলনের হিড়িক : হুমকির মুখে সিলেট মহাসড়ক
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৭:০৪
বালু উত্তোলনের হিড়িক : হুমকির মুখে সিলেট মহাসড়ক
তানভীর আঞ্জুম আরিফ
প্রিন্ট অ-অ+

মৌলভীবাজার শহর তীরবর্তী মনু নদী থেকে বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। নামে বেনামে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলের নেতাকর্মীরা শক্তিশালী সেলু পাম্প, বোমা মেশিন, বলগেট বা বলহেট মেশিনের মাধ্যমে একাধিক স্থান থেকে উত্তোলন করছেন বালু। যার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সিলেট-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং নদী তীরবর্তী শতাধিক গ্রাম।


এলাকাবাসীর অভিযোগ এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। নদী গর্ভে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক গ্রাম, ঘর-বাড়ি এমনকি মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কটিও। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ থাকলেও মানছেন না ইজারাদাররা।


আইনের ৪নং ধারার (খ)তে বলা হয়েছে সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকার সর্বনিন্ম ১ কিলোমিটার দূর থেকে বালু তুলতে হবে। কিন্তু মনু নদীতে এর কিছু মানা হচ্ছে না। বালু তোলা নিয়ে চলছে হরিলুট। যে যার মতো করে যেখান থেকে ইচ্ছা উত্তোলন করছে বালু।


জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে সদর উপজেলার শেরপুর পর্যন্ত মনু নদীর ২০টি স্থান বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে যে খাটটি ইজারা দেয়া হয়েছে সেখান থেকে বালু উত্তোলন না করে এর দু-পাশের কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও ইজারাদাররা বালু উত্তোলন করছেন। কিন্তু এসব দেখেও না দেখার বান করেছে প্রশাসন। এলাকাবাসী মৌখিকভাবে একাধিক অভিযোগ দিলেও বাস্তবে কোনো কাজ হচ্ছে না। ক্ষমতাশীল দলের নেতাকর্মীদের ভয়ে কেউ মুখ খোলে কিছু বলতে ও প্রতিবাদ করতে পারছেন না।


মনু নদীর ইজারাকৃত ২০টি স্থান কাদের কাছে দেয়া হয়েছে তথ্যটি জানতে জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখার আলমগীরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, স্যার বলেছেন পয়েন্টের নাম দেয়া যাবে তবে কার কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে এটা বলা যাবে না।


সরেজমিন মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দৌপাশা, তালরতল ও খেয়া ঘাটে গেলে দেখা যায়, ওই স্থান থেকে শাহবন্দর পর্যন্ত মনু নদীর বাঁধের প্রায় ১ কিলোমিটারে কয়েকটি বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যত দিন যাচ্ছে ওই ফাটলগুলো আরো বড় হচ্ছে। এর একটু সামনে দুর্লবপুর বড়বাড়ি হতে কনকপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধেও ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে এবং আখাইকুড়া ইউনিয়নের নতুন ব্রিজের নিচ থেকে মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে আখাইলকুড়া ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের নব-নির্মিত ভবন ভরাট করা হচ্ছে অথচ আইন রয়েছে ব্রিজের ১ কিলোমিটার দূর থেকে বালু উত্তোলন করার।


এ ছাড়াও হুমকির মুখে আছে, চাঁদনীঘাট, সাবিয়া, বলিয়ারভাগ, বালিকান্দি, ডেউপাশা, শ্রীরামপুর, শাহবন্দর, ধৌপাশা, দুর্লভপুর, মমরুজপুর, আশিয়া, কনকপুর, দলিয়া, গাঘুটিয়া, নলদাড়িয়া, দামিয়া, বাড়ন্তী, বেকামুড়া, সম্পাসী, থানাবাজার, ইসলামপুর, কামালপুর, মিরপুর, কাজিরবাজার, পাঠানটুলা, নাদামপুর, গোড়াখাল, সরকারবাজার, ফতেপুর, সাধুহাটি, শাহবাদ ও শেরপুর গ্রাম।


এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আলম খান বলেন, মিটিং করে সিদ্ধান্ত হয়েছে যারা বলগেট বা বলহেট মেশিন দিয়ে বালু তুলবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে আমরা কয়েকটি মেশিনও জব্দ করেছি এবং অভিযান চালানোর জন্য ইউএনও ও পুলিশকে বিষয়টি অবগত করে রাখা হয়েছে।


বিবার্তা/আরিফ/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com