শিরোনাম
কুড়িগ্রামে শীতে ৬ জনের মৃত্যু
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:০৯
কুড়িগ্রামে শীতে ৬ জনের মৃত্যু
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

শীতের প্রকোপ বাড়ছেই। থরথর শীতে কাঁপছে পুরো দেশ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। টানা শৈত্য প্রবাহে গত কয়েক দিনে উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।


রবিবার আধুনিক সদর হাসপাতালে এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি। রাজারহাট উপজেলায় মারা গেছেন ৩ জন। মৃতদের মধ্যে গত শুক্রবার সকালে নয়ন মনি ও বৃহস্পতিবার মীম সদর হাসপাতালে মারা যান। বাকি ৩ জনকে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জাহাঙ্গির আলম।


রাজারহাট আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আজ সোমবার কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৩.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


সকালে তীব্র ঠান্ডায় কাজে বের হতে পারছে না মানুষ। এছাড়াও বিকেল থেকেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় সন্ধ্যার পরপরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার ও দোকানপাট।


আবহাওয়া অধিফতর জানিয়েছে, দুদিনের উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের কারণে মেঘ কেটে গেছে। ফলে শীতল বায়ু দেশের অভ্যন্তরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাই হঠাৎ করে শীত বেড়ে গেছে। এই অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। তারা আরও জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ার আভাস দেয়া হয়েছে। তা দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন জানান, গতকালের তুলনায় আজকে সারা দেশের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। এই শৈত্যপ্রবাহ আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল ৯-১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে। তবে সূর্যের দেখা মিলবে। তিনি আরও বলেন, গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গাতে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কুয়াশা আর ঠাণ্ডায় কাজে বের হতে পারছেন না মানুষ। হাড় কাঁপানো শীতে গরম কাপড় আর আগুনের উত্তাপই মানুষের ভরসা। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যান চালকদের। রাজধানীসহ দেশের জেলা-উপজেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা।


আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ বজলুর রশিদ বলেন, যশোরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর নিচে নামলে শৈত্যপ্রবাহ বলে গণ্যকরা হয়। আর সে হিসেবে মাঝারী থেকে তীব্র শৈত্য প্রবাহ চলছে বিভিন্ন জেলায়। শুক্রবার দেশের অন্তত ২০টি জেলায় তাপমাত্রা ছিলো ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নীচে।
আবহাওয়া বিজ্ঞানী রাশেদ চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধির দীর্ঘ মেয়াদী গড় থেকে বর্তমান সময়ের শীত হ্রাস পাচ্ছে এটা ঠিক। তবে শীতকালীন ‘লা নিনার’ কারণে এবার বাংলাদেশের কোথাও কোথাও কিছুদিন কিছুটা বেশি মাত্রায় ঠাণ্ডাও পড়তে পারে। এবারকার ঠাণ্ডাটা অন্যান্য বছরের চেয়ে একটু বেশি ব্যতিক্রম।


আমাদের দেশে মুলত: ডিসেম্বর থেকে ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মৃদু থেকে মাঝারী শৈত্যপ্রবাহ শুরু করে আবার কিছুদিন পর তা হ্রাস পেয়ে গেছে এমন উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু এবার পুরো ডিসেম্বরের মাসে ঠাণ্ডা ছিল খুবই সহনীয় মাত্রায়। ডিসেম্বর মাস পেরিয়ে গেলেও ঠাণ্ডা না পড়ায় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে শীত পড়বে না, সহনীয় মাত্রার ঠাণ্ডায় কেটে যাবে এবারের শীতকালটা। হঠাৎ অতিমাত্রায় শীত পড়ায় অনেকেই বিস্মিতও হয়েছেন।


বিবার্তা/ইমদাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com