মাতৃভাষা দিবসের রূপকার রফিকুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙচুর
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৫, ১৭:২৫
মাতৃভাষা দিবসের রূপকার রফিকুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙচুর
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রূপকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের স্মরণে কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে নির্মিত ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।


বুধবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যুরাল ভাঙার ছবি ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন মহল ক্ষোভ জানান।


স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার ম্যুরালটি পুনঃস্থাপন করার কথা বলেছেন।


নগরের রাজবাড়ি এলাকায় কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের পরিবারের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একটি শহীদ মিনার এবং ম্যুরাল স্থাপন করা হয়। ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বুলি ইসলাম। ম্যুরালের পাশেই রফিকুল ইসলামের পৈত্রিক বাড়ি।


বুধবার সকাল থেকে রফিকুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা দেয় তীব্র সমালোচনা। তবে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। এমনকি আশপাশের লোকজনও কেউ কিছু বলছেন না।


কুমিল্লা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মো. নূরে আলম ভূঁইয়া বলেন, বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে রূপ দিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের অবদান অপরিসীম। তার স্মরণে স্থাপিত ম্যুরালটি ভেঙে ফেলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। আমরা এর নিন্দা জানাই। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ম্যুরালটি পুনঃস্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।


কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের স্মৃতি রক্ষায় ও তার সম্মানে ম্যুরাল পুনঃস্থাপনসহ যা কিছু করণীয় সবকিছুই করা হবে।”


১৯৯৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রফিকুল ইসলাম জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানকে কাছে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদদের অবদানের কথা উল্লেখ করে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতির প্রস্তাব করেন।


এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি পালিত হচ্ছে।


গৌরবময় এই অবদানের জন্য ২০০১ সালে ‘মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ একুশে পদক লাভ করে। বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর কানাডার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com