
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় নিজ জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন প্রান্তিক কৃষক রফিকুল ইসলাম। উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা এলাকার এই কৃষক তার নিজ জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদ করে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সাড়া ফেলেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে বিক্রির জন্য নিজের ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করছেন রফিকুল ইসলাম। ক্ষেতের চারপাশে যেন রঙের মেলা, যেখানে সবুজ পাতায় মোড়ানো সোনালি, লাল, হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি চোখ জুড়াচ্ছে। এই চমৎকার রঙিন ফুলকপি দেখে স্থানীয় কৃষক ও উৎসুক দর্শকেরা মুগ্ধ হয়েছেন – কেউ কিনছেন, কেউ চাষাবাদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
রফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েকবছর ধরে তিনি নিয়মিত সাদা ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে আসছেন। এবছর, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৩৩ শতক নিজ জমিতে হাইব্রিড রঙিলা জাতের এই রঙিন ফুলকপি চাষ করেন। এই ফুলকপি চাষের জন্য বিশেষ কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। সব মিলিয়ে ৮-১০ হাজার টাকার খরচে তিনি ৫০-৬০ হাজার টাকার বিক্রির আশা করছেন। প্রতিটি ফুলকপি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করে ইতোমধ্যেই ৩০-৩৫ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু হয়েছে। চলতি বছর রবি মৌসুমে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে রফিকুল ইসলামের চারা বিতরণ, জৈব সার, কীটনাশক, ফেরোমন ফাঁদ ও পরামর্শসহ সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে রঙিন ফুলকপির আকর্ষণীয় রঙ ও সুস্বাদু স্বাদের কারণে এগুলোর বাজার মূল্য সাদা ফুলকপির তুলনায় বেশি হওয়ায়, কৃষকরা কম পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ পেয়ে চলেছেন। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এই নতুন ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় তা পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে এবং অন্যান্য কৃষকও চাষাবাদের জন্য উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় রঙিন ফুলকপি চাষ করে আমি কম খরচে বেশি লাভবান হয়েছি। আগামী মৌসুমে আরও বেশী জমিতে এই চাষাবাদ করবো।
খামারপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ.ম.জাহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিস থেকে সার্বক্ষণিক ওই কৃষককে সার, বীজ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তার রঙিন ফুলকপি দেখে অন্যান্য কৃষকরাও চাষাবাদের জন্য উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রঙিন ফুলকপি চাষাবাদের শুরু থেকেই কৃষক রফিকুল ইসলাম কে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। ফুলকপির ফলনও ভালো হয়েছে। নতুন এই জাতের রঙিন ফুলকপি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করবে। সেই সাথে অল্প পুঁজিতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে। এইজন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ সার্বিক বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছে।
বিবার্তা/জামান/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]