কুড়িগ্রামে সরিষা চাষে ঝুঁকছে কৃষক
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:২৪
কুড়িগ্রামে সরিষা চাষে ঝুঁকছে কৃষক
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামে সয়াবিনের ঘাটতি এবং আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা চাষে ঝুঁকছে জেলার কৃষক। সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেয়ে দুই ফসলি জমি থেকে তিন ফসলি জমি উন্নতি করে অর্থনৈতিক লাভবান হচ্ছে জেলার প্রান্তিক চাষীরা।


সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার রাজারহাট উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার আবাদি কৃষি জমি রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ জমি এক ও দু’ফসলি। শুধু আমন ও বোরো ধানের উপর নির্ভরশীল ছিল এই অঞ্চলের কৃষক। অপেক্ষাকৃত নীচু জমি হওয়ায় প্রতি বছর বন্যায় কিংবা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জমিগুলো কয়েক মাস পানিবন্দি হয়ে পতিত থাকে। পানি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এখানে চাষাবাদ হতো না। ফলে কৃষকদের আমন ও বোরো চাষাবাদের মাঝামাঝি সময় জমিগুলো অনাবাদি থাকত। এসব দু’ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত করতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।


এতে করে কৃষকরা পতিত জমি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক লাভবান হবার পাশাপাশি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে কৃষকের জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরিষার বাম্পার ফলনে একদিকে রান্নার তেলের সংকট কমার পাশাপাশি কৃষি অর্থনীতি বিস্তার ঘটছে।


রাজারহাট সদর উপজেলার ছত্রজিৎ গ্রামের কৃষক কাজল চন্দ্র রায় জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। আমার এই জমিতে বছরে দু’বার ফসল করতাম। কিন্তু এবার আরডিআরএস বাংলাদেশ হতে সার,বীজ,কীটনাশক পেয়েছি। বিঘা প্রতি হালচাষ, সেচ, ঔষুধ, কাটামাড়াসহ সরিষা চাষে ৫/৬হাজার টাকা খরচ করে হয়েছে। বিঘা প্রতি ৭/৮মণ সরিষা পাবার আশা তার। বর্তমান বাজার দরে সরিষা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা মণ হিসেবে ১৮ হতে ২০হাজার টাকা লাভ করবেন কৃষক।


একই এলাকার কৃষাণী শোভারাণী জানান, সয়াবিন তেলের সংকটে সরিষার তেলের চাহিদা বেড়েছে। গরিব কৃষকরা নিজেদের আবাদি সরিষা তেল, শাক খাবার পাশাপাশি সরিষার গাছ শুকিয়ে জ্বালানি খড়ি হিসেবে ব্যবহার করে সাংসারিক খরচ কমিয়ে আনছেন তারা। এতে করে সংসারে বাড়তি খরচ কমে সাশ্রয় হচ্ছে।


বৈদ্যের বাজার গ্রামের কৃষক তারানাথ রায় বলেন, আমাদের উপজেলায় সরিষা বারি-৭, বারি-৯, বারি-১৪ চাষ হয়েছে বেশি। এর মধ্যে বারি-১৪ জাতের সরিষা কম সময়ে ফলন আসে এবং ফলনও বেশ ভালো হয়। এই সরিষা মাড়াই করে সময় মতো ধান লাগাতে পারব।


কৃষিবিদ আব্দুস সাত্তার জানান, বেসরকারি সংস্থা পল্লি কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় আরডিআরএস বাংলাদেশের বাস্তবায়নে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আওতায় রাজারহাট উপজেলায় ১০০ একর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। তেল জাতীয় ফসল চাষ সম্প্রসারণ, প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে জেলার কৃষি অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। দু’ফসলি জমি থেকে তিন ফসলি জমি রূপান্তরিত হওয়ায় জমির উর্বরতা বাড়ছে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে।


বিবার্তা/বিপ্লব/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com