ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মেঘনা নদী থেকে অবাধে লুট হচ্ছে বালু। ইজারা ছাড়াই প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার প্রভাবশালী একটি চক্র।
এতে করে সরকার যেমন বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয় কয়েকটি গ্রাম। এছাড়া চড়া মূল্যে বালু মহাল ইজরা নেওয়া প্রতিষ্ঠানও বিপাকে পড়েছে।
অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে চলছে এই লুটতরাজ। এছাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই চক্রের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের চরলাপাং এলাকায় মেঘনা নদী থেকে প্রতিদিন ৫-৭টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর এলাকার একটি বালুখেকো চক্র। প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে চক্রটি। বাজারমূল্য অনুযায়ী উত্তোলিত বালুর মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। গত ২৫দিন ধরে অবাধে বালু লুট করছে রায়পুরার ওই চক্রটি। আর এই চক্রের নেতৃত্বে আছেন রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও মির্জাচর গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলামের নেতৃত্বে চলছে এই বালু লুট বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তার সঙ্গে মির্জাচরের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির কয়েকজন নেতাও আছেন।
অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নবীনগরের চরলাপাং, সাহেবনগর, নাসিরাবাদ, রায়পুরার মির্জাচর ও শান্তিপুর ও কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের বাসিন্দারা নদীগর্ভে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার আতংকে সময় পার করছেন।
নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল আলম বলেন, চরলাপাং গ্রামের বেশিরবাভাগ অংশ নদীবেষ্টিত। অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে কৃষি জমি ও ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষজন এসে প্রতিনিয়ত অভিযোগ জানাচ্ছেন।
বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানানো হলে তিনি প্রশ্ন রাখেন যে- আমি কি নদীতে গিয়ে বসে থাকব? আমাদের এলাকাটা যেন বাঁচে, সেজন্য প্রশাসন যেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে- সেই দাবি জানাচ্ছি।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে মদদ এবং কমিশন নেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে নবীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু মুছার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জেসমিন সুলতানা বলেন, ইজারা এলাকার বাইরে থেকে কারও বালু উত্তোলন করার সুযোগ নেই। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার জব্দসহ আর্থিক জরিমানা করা হয়। শীঘ্রই এ বিষয়ে বৃহৎ আকারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
ভাঙনের রোধে প্রশাসন দ্রুত নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করার প্রদক্ষেপ নিবেন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
বিবার্তা/আকঞ্জি/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]