ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে
খানসামায় আমনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, লোকসানের শঙ্কা
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০:০৬
খানসামায় আমনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, লোকসানের শঙ্কা
খানসামা, দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় আমনের ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ফসল ঘরে তোলার সময়ে ধান গাছ নুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। লোকসানের শঙ্কায় যেন তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এছাড়াও ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাক সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য।


শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে খানসামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, গত বুধবার বিকেল থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক খেতে পাকা ও আধা পাকা ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এছাড়া আগাম জাতের আলু সহ শীতকালীন আগাম সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অসময়ের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ধান ও সবজি ক্ষেত। কেউ কেউ ফলনের আশা ছেড়ে দিয়ে ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন গো-খাদ্য হিসেবে। সেই সাথে শ্রমজীবী মানুষও চরম বিপাকে পড়েছেন।


উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এই উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে মোট ১৩৭৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন রোপা আমন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। এ পর্যন্ত ১৩৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান কর্তন হয়েছে। যার গড় ফলন ৬ দশমিক ৪৫ টন।


এদিকে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আজ দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘূর্ণিঝড় "দানা"র প্রভাবে সকাল ৯ টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘন্টায় আকাশ মেঘলা থাকবে এবং এ জেলার কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে।


উপজেলার পাকেরহাট এলাকার কৃষক নূরমোহাম্মদ ইসলাম বলেন, অসময়ে এই বৃষ্টির কারণে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেড় বিঘা জমিতে বর্গা নিয়ে আমন ধান রোপন করেছি। পুরো ক্ষেত নুয়ে পড়েছে, ধানের শিষে যে দানা রয়েছে, তা এখনো শক্ত হয়নি। অনেক ধান চিটা হয়ে যাবে। আর যে ফলন হওয়ার কথা ছিল তাও কমে যাবে।


উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের কৃষক তরিকুল ইসলাম প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন হতাশা আর আক্ষেপের গল্প। তিনি বলেন, নিজের জমানো সবটুকু অর্থ দিয়ে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে লাভের আশায় আমন লাগিয়েছিলাম। কিন্তু এই ঝড় ও বৃষ্টির ফলে সব ধান পড়ে গেছে। এখন লাভ তো দুরে থাক মুলধন তুলতে পারবো কি না জানি না।


এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ঝড়বৃষ্টির প্রভাবে দেড়-দুই হেক্টর জমির ধান নুয়ে পড়েছে। তবে পুনরায় বৃষ্টি না হলে এসব ধানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যেকোনো ফসলের ক্ষতি এড়াতে উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।


বিবার্তা/জামান/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com