সিংড়ায় লাউ চাষে সফল প্রান্তিক কৃষক ময়দান
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:০০
সিংড়ায় লাউ চাষে সফল প্রান্তিক কৃষক ময়দান
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের বাড়ির সামনে ১৫ শতক পরিত্যক্ত জায়গায় জীবনের প্রথম বার পরীক্ষামূলক হাজারী জাতের উচ্চ ফলনশীল লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন ময়দান আলী নামের এক প্রান্তিক কৃষক।


১৫ শতক জমিতে লাউ চাষে তার খরচ মাত্র ৫ হাজার টাকা। ১৫ দিনে বিক্রয় করেছেন ২০ হাজার টাকা। আরো ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বিক্রয় করার আশা করছেন তিনি। খরচ বাদে সম্ভাব্য তার লাভের পরিমাণ প্রতি শতাংশে প্রায় ২ হাজার টাকা। কম খরচ ও অল্প সময়ে এমন লাভের হিসাব দেখে লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের।


কৃষক ময়দান একজন সফল ধান ও কচু চাষী হিসাবেও এলাকায় বেশ সুনাম আছে। এবার মাত্র দুই মাসের মধ্যে লাউ চাষে অভাবনীয় লাভ পেয়ে খুশি হয়েছেন তিনি।


উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, হাজারী লাউ একটি উচ্চ ফলনশীল লাউ জাত। এ জাতের লাউ বপনের ৫ থেকে ৭ দিনে চারা হয় এবং ৪২ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফুল ও ফল ধরে। এছাড়া ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যেই বাজারজাত করা যায়। এ লাউ দেখতে সুন্দর ও তরতাজা। খেতেও সুস্বাদু। এছাড়া বাজারে চাহিদা ও ফলনে বেশি হওয়ায় এ লাউ চাষে কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক ময়দানের বাড়ি সংলগ্ন সবজি বাগানের মাচায় ঝুলছে লম্বা সবুজ রঙের হাজারী জাতের অসংখ্য লাউ। যে দিকে তাকানো যায় শুধু লাউ আর লাউ। বাগানের এসব ঝুলন্ত সবুজ কচি লাউ দেখলে যে কোন মানুষের চোখ জুড়িয়ে যায়। কৃষক ময়দান এ সবজি বাগানে জৈব সারের সাথে সামান্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছেন। অন্য দিকে কীটনাশক ও বালাই নাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। এজন্য বিষমুক্ত নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব ময়দানের সবজি বাগানের লাউ খেতে যেমন সুস্বাদু। বাজারেও এ সবজির চাহিদা বেশি।


কৃষক ময়দান জানায়, বাড়ির সামনে আনুমানিক ১৫ শতাংশ জায়গা সারা বছর পরেই থাকে। এবছর স্থানীয় কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে জীবনের প্রথমবার লাউ চাষ শুরু করি। হাজারী লাউ বীজ সংগ্রহ করে গত শ্রাবণ মাসের প্রথম সপ্তাহে বপন করেছিলাম। দুই মাস পরিচর্যা করার পর আমার সবজি বাগানে অসংখ্য লাউ আসে। আজ থেকে ১৫-২০ দিন আগে থেকেই লাউ বাজারজাত করা শুরু করেছি। এবার বাজারে তরিতরকারির দাম থাকায় লাউয়ের দামও ভালো পাচ্ছি।


তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত আমি ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। ওজন ভেদে প্রতিটি লাউ খুচরা ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং পাইকারি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। আরো ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করার আশা করছি। মাচা তৈরী সহ আমার মোট খরচ ৫ হাজার টাকা। লাউ চাষে আমি কোনো কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহার করি নাই। পঁচা কচুরিপানা, জৈব সারের সাথে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছি।


সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বর্ষাকালীন সবজি বা খরিপ-২ মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় ৩১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছে। এর মধ্যে লাউ চাষ হয়েছে ১২ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ৯ হেক্টর জমির লাউ কর্তন করা হয়েছে যা প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ২৫ টন। এখন সারা বছরই সবজির চাষ হয়। কৃষকরা জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন। বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকায় ও ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।


বিবার্তা/রাজু/জেএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com