
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ১৩ গ্রামের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষতিপূরণের ৬ দফা দাবিতে কয়লাখনি গেট এলাকা ঘেরাও, বিক্ষোভ সমাবেশসহ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সময় সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে খনির গেটে কঠোর অবস্থানে ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
ক্ষতিগ্রস্তদের সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে ৬ দফা দাবিতে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৩ গ্রামের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ নিজ নিজ গ্রাম থেকে ব্যানার ও ফ্যাস্টুনসহ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কয়লাখনির গেট এলাকায় ঘেরাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। এলাকাবাসী বিক্ষোভ প্রদর্শনপূর্বক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কের ছোটবড় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
কর্মসূচি চলাকালে দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্ত দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা, আলী হোসেন, রবিউল ইসলাম মণ্ডল, আল বেরনী, আব্দুর রহমান, আবেদ আলী, সাইদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামানসহ আরো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী।
আগামী ২০ দিনের মধ্যে ৬ দফা দাবি পূরণ করা না হলে দাবি পূরণের জন্য কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এর জন্য খনির উৎপাদন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কোনো প্রকার বিঘ্নিত হলে এর দায়দায়িত্ব খনি কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্তদের ৬ দফা দাবিতে রয়েছে-
১. খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতে স্থায়ী চাকরি প্রদান।
২. ১৩ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়িগুলোতে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন, তাদেরকে পুনর্বাসন করা।
৩. ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দেওয়া।
৪. ক্ষতিগ্রস্তদের এককালীন অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া।
৫. সুপেয় পানির ব্যবস্থা করাসহ মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা এবং
৬. যেসকল ক্ষতিগ্রস্তদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদেরকে উৎপাদিত কয়লার ৫ শতাংশ বোনাস দেওয়া।
ক্ষতিগ্রস্ত দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ভূগর্ভে মাইন বিস্ফোরণের কারণে বিকট শব্দ ও কম্পনে খনি সংলগ্ন বৈগ্রাম-কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বর পাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জ্জবর পাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দুর্গাপুর মোট ১৩টি গ্রামের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ফেটে ও দেবে গেছে। অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামবাসীর। আমরা ৬ দফা দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রামবাসী। আগামী ২০ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলা হবে। এরজন্য ক্ষতি উৎপাদন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কোনো প্রকার বাধাগ্রস্ত হলে এর দায়দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, গ্রামবাসী ক্ষতির বিষয়টি সার্ভে করা হচ্ছে। সার্ভে শেষ হলেই তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/রোমেল/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]