
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধভাবে ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার হচ্ছে ভূগর্ভস্থ থেকে উদ্গিরিত হওয়া প্রাকৃতিক গ্যাস। কূপ খননের লিকেজ থেকে গ্যাস ড্রামে সংরক্ষণ করে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সরবরাহ হচ্ছে বাস-বাড়িসহ কারখানায়। স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র অনিরাপদভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জ্বালানি পদার্থের এমন অনিরাপদ ব্যবহারে অগ্নিকাণ্ডসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের।
তিতাস নদীতে মাকড়সার জালের মত ছেয়ে আছে প্লাস্টিক পাইপ। এসব পাইপ দিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন গ্রামের বাসা-বাড়িসহ ছোট কারখানায়। নদী থেকে উদ্গিরণ হওয়া গ্যাস ড্রামে সংরক্ষণের পর ঝুঁকি নিয়ে চলে সরবরাহের কাজ।
এই দৃশ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের ৪/৫টি গ্রামজুড়ে। যেখানে সড়কের পাশে গাছের ডালে, বাসা-বাড়ির উপর দিয়ে একে বেঁকে নেওয়া হয়েছে উড়াল গ্যাসের সংযোগ। মূলত তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর কূপ খননের সময় লিকেজ থেকে গ্যাস মাটির উপরের স্তরে চলে আসে। এতে বাকাইল, ছোট বাকাইল, মধ্যমপুর, শ্যামপুরসহ আশপাশের এলাকায় মাটির ফাঁক-ফোকর, নলকূপ, নদীর পাড়, জমির আইল এবং বাড়ির আঙিনা দিয়ে গ্যাস উদ্গিরণ হতে থাকে। উদ্গিরণ বন্ধে ব্যর্থ হয়ে ২০০৮ সালে কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লি.। আর সে সময় থেকে একটি সিন্ডিকেট এই লিকেজ হওয়া গ্যাস অনিরাপদ উপায়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সরবরাহ করছে। যেখানে ৪/৫টি গ্রামের বাসা-বাড়ি থেকে প্রতি মাসে ৫শ থেকে ৭শ টাকা এবং প্রায় অর্ধশত কারখানা থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে। এতে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। অভিযোগ রয়েছে বাকাইল ও শ্যামপুর গ্রামের কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট এই অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে তাদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। অনিরাপদভাবে এই গ্যাস ব্যবহারের ফলে যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিরাপদ উপায়ে বৈধভাবে গ্যাস সরবরাহের দাবি স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ অবৈধভাবে গ্যাসের ব্যবহার বন্ধে দ্রুত অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা বলেন, এ অবৈধ কাজটি যে কোন প্রকৌশলীর মাধ্যমে হোক না কেন এ ব্যাপারে আমরা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ২৪টি কূপ থেকে প্রতিদিন ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
বিবার্তা/আকঞ্জি/রোমেল/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]