উত্তরের জেলা দিনাজপুরের কৃষি সমৃদ্ধ খানসামা উপজেলায় আশ্বিনের বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে কৃষকদের মাঝে। উপজেলা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল আমন ধান। আর এজন্য সার, কীটনাশক দিয়ে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এই উপজেলার কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন রোপণের শুরু থেকে কৃষককে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আমন চাষের ভরা মৌসুম আষাঢ় মাসেও ছিল না আকাশে বৃষ্টির দেখা। যার ফলে সঠিক সময়ে আমন ধান রোপণ করতে পারেনি প্রায় কৃষক। তবে আমন ধান চাষ করতে কোনো কৃষক বাদ পড়েননি।

আমনের শুরুতে সেচ এর পানি দিয়ে অনেকে আমন ধান রোপণ করছেন। বড় কোনো দুর্যোগ না হলে আমনের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সার ও কীটনাশক এর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ অনেকটাই কম হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

২৭ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন আমনের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কম-বেশি সব কৃষকের কষ্টে অর্জিত আমন ধানের সবুজ পাতার রঙে ছেয়ে গেছে মাঠ। কেউ ধান গাছের আগাছা পরিষ্কার করছেন। আবার কেউ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। সবুজ পাতায় বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। তবে মাঝে মাঝে মাজরা পোকার আক্রমণ হলেও রোপা-আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মৌসুমে ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৫৮৮ টন আমন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, এবছর ১ একর জমিতে আমন লাগিয়েছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর সবকিছুর দাম বেশি। কাজেই ভালো ফলন হলেও আগের তুলনায় লাভ কম হবে।

উপজেলার ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের কৃষক দিনোবন্ধু রায় বলেন, এ বছর সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে ধান রোপণ করতে হয়েছে। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সবসময় কৃষি অফিসের পরামর্শ নিচ্ছি। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, চলতি মৌসুমে আমনে সেরকম কোন রোগবালাই কিংবা পোকার আক্রমণ নেই। বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অনেক ভালো ফলন পাবেন কৃষকরা। কৃষকের আমন চাষে যাতে কোনো বালাই না হয় এজন্য উপ-সহকারী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। পাশাপাশি উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সবসময় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

বিবার্তা/জামান/এমজে