সিংড়ায় পাটের দাম নিয়ে সন্তুষ্ট নয় কৃষক
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১৪:১৩
সিংড়ায় পাটের দাম নিয়ে সন্তুষ্ট নয় কৃষক
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কখনো রোদ কখনো বৃষ্টি আবার কখনো টানা খরতাপ এসব বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই জমি থেকে পাট কেটে সোনালী আঁশ ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নাটোরের সিংড়ার কৃষকরা।


এ বছর পাটের ফলন ভালো হলেও সন্তোষজনক দাম পাচ্ছেন না তারা। কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাটের দাম ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কেনা বেচা হলেও এখন আর সেই দাম নেই।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ও সরকার পরির্বতনের প্রভাবে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে দাম কমেছে ৫শত থেকে ৭শত টাকা। তবে দেশ স্বাভাবিক হলে পাটের দাম বাড়বে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।


উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে চলতি মৌসুমে উপজেলায় রবি পাট-১ ও অন্যান্য দেশি জাতের মোট ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।


সরেজমিনে উপজেলার কলম, শেরকোল, হাতিয়ান্দহ, চামারী ও লালোড় ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে খোঁজ নিয়ে ও ঘুরে দেখা যায় আবহমান গ্রাম বাংলার চিরচেনা পাটচাষিদের কর্মব্যস্ততার সেই চিত্র।


উপজেলার শেরকোল পুঠিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি খালে দেখা যায়, পাট চাষীরা পানিতে জাগ দেওয়া পাটের আঁশ ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ খালের কোমর পানিতে কাজ করছেন ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। এদর মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। নারী শ্রমিকরা জানায়, আঁশ ছড়ানো পাট খড়ি দুই ভাগের এক ভাগ নেওয়ার শর্তে তারা এসব কাজ করছেন।


শেরকোল হাড়োবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আতাহার আলী জানান, আমার নিজের ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। ২ দিন আগে কেটে ঘরে তুলেছি। আতাহার জানান, হাল চাষ, পানি সেচ, সার, বীজ ও শ্রমিক খরচসহ জমি থেকে পাট কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত আমার প্রতি বিঘা খরচ হয়েছে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় আমি ফলন পেয়েছি ৮ থেকে ৯ মন। বর্তমান বাজার ২৬০০/-টাকা থেকে ২৮০০/-টাকা প্রতি মণ। সেই হিসাবে আমার তেমন লাভ হবে না। পাটের দাম প্রতি মণ ৪ হাজার টাকা করার দাবি করেন তিনি।


কলম গ্রামের কৃষক রহিদুল ও পম গ্রামের কৃষক সানোয়ার জানান, পাট রোপণের শুরু থেকেই এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জমিতে ৪ থেকে ৫ বার পানি সেচ দিতে হয়েছে। যা গত বছর লেগেছে ১ থেকে ২ বার। এছাড়া তেল, সার ও শ্রমিক খরচ পড়েছে বেশি, সব মিলে এবার উৎপাদন খরচ বেড়েছে দেড়গুন।


তারা জানায়, মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম ভালো ছিল। বাজারে ৩হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় পাট বিক্রি হয়েছে। পাট ভেদে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬শত থেকে ৩ হাজার টাকায়। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে পাটের দাম কমেছে ৫শত থেকে ৭শত টাকা।


সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনায় ১হাজার ৯শত কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে ১ কেজি করে রবি পাট-১, জাতের পাটবীজ দেওয়া হয়েছিল। এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষক। তবে দেশ স্বাভাবিক হলে পাটের দাম আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।


বিবার্তা/রাজু/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com