
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের উত্তর রানিগাঁওয়ে দুবাই প্রবাসী রাসেল মিয়ার বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টাকালে গৃহকর্তার বাবা আব্দুল হামিদকে (৬৫) ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন করে ডাকাতরা। বুধবার (১৪ আগস্ট) গভীর রাত ৩টায় উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের উত্তর রানিগাঁও গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল হামিদ মারা যান। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র। এ ঘটনায় আহত হয়েছে নিহতের পুত্রবধূ রিতি আক্তার (২৬)।
স্বজন, প্রতিবেশী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন নিহত আব্দুল হামিদ ও তার পুত্রবধূ রিতি আক্তার। নিহতের দুই ছেলে দীর্ঘদিন ধরে আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। পুত্রবধূ রিতি আক্তারও দুবাই থেকে কয়েক মাস মাস পূর্বে স্বামী রাসেলের কাছ থেকে বাড়িতে এসেছেন।
বুধবার রাতে নিহত আব্দুল হামিদের স্ত্রী চলে যান পিত্রালয়ে। বাড়িতে শুধু আব্দুল হামিদ ও তার পুত্রবধূ রিতি আক্তার ছিলেন। তারা রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। জনশূন্য প্রবাসীর ঘরে রাত অনুমান ৩টায় ৫-৬ জনের একদল মুখোশধারী ডাকাত ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় মুখোশধারী ডাকাত অস্ত্রের মুখে তার হাত-পা বেঁধে ডাকাতির চেষ্টা করে। এতে আব্দুল হামিদ চিৎকার করলে আব্দুল হামিদকে (৬৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তাণ্ডব চালায়।
এ সময় ঘরে থাকা পুত্রবধূ চিৎকার করলে ডাকাতরা প্রবাসী রাসেল মিয়ার সন্তানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রী রিতি আক্তারের হাত-পা বেঁধে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা হাতি নেয়। এসব তথ্য জানিয়েছেন আহত রিতি আক্তারের বড় বোন রাহেলা আক্তার।
প্রবাসী রাসেলের মামাতো ভাই ছাব্বির মিয়া জানান, ঘরের ক্যাবিনেট ভাঙচুর ও ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে মূল্যবান জিনিস লুট করে নেয় মুখোশধারীরা।
ডাকাতির ঘটনা নিশ্চিত করে রানিগাঁও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সিরাজ মিয়া বলেন, প্রবাসীর ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা করা হয়েছে।
ডাকাতরা কী পরিমাণ লুট করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, নিহতের পুত্রবধূ চিকিৎসাধীন, এখনো জ্ঞান ফেরেনি। শুনেছি স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থকড়ি নিয়ে গেছে ডাকাত দল।
তিনি আরও জানান, নিহতের ডান হাতের বাহু ও বাম পায়ের হাঁটুর নিচে গুরুতর কাটা জখম করা হয়েছে। রাতেই আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাত ৪টায় ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি সাড়ে ৪টায় মারা যান।
সকালে থানার এসআই জহিরুল ইসলাম মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে দুপুরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মাধবপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নির্মলেন্দু চক্রবর্তী ও থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হিল্লোল রায়।
ওসি জানান, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। নিহতের পুত্রবধূ কথা বলতে পারছেন না। জ্ঞান ফিরলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট মাধবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নির্মলেন্দু চক্রবর্তী নিহতের স্ত্রীর বরাত দিয়ে জানান, একই এলাকার আতাউর রহমান নামে একজনের কাছে তাদের লেনদেন রয়েছে। এ নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়েছে; কিন্তু টাকা না পেয়ে তারা আতাউর রহমানসহ ৩ জনের নামে আদালতে মামলাও করেছেন। এ নিয়ে আতাউর রহমান গংরা তাদের ওপর হামলার চেষ্টাও করেছে বলে তিনি জানান। তবে তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]