সড়কে ফিরল ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশ
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৪, ১৪:০৬
সড়কে ফিরল ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশ
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

''পুলিশ হয়েছে সংস্কার, কাজ করব জনতার। চলো চলো কর্মে চলো, জনগণের সেবা করো" এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন সড়কে কাজে যোগ দিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশ। সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন সড়কে যানজট নিরসনে কাজ করতে দেখা যায় তাঁদের। এছাড়াও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি বিএনসিসিসহ স্বেচ্ছাসেবীরাও তৎপর আছেন সড়কে।


সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-সহিংসতার জেরে এক সপ্তাহের মতো ঠাকুরগাঁওয়ের সড়কে ছিলো না ট্রাফিক পুলিশ। পুলিশ শূন্য রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বাঁশি-লাঠি হাতে এ কয়েকদিন সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছেন শিক্ষার্থীরা।


ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারে পতনের পর পুলিশের চেইন অব কমান্ড পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় থানা ও ট্রাফিক পুলিশের স্থাপনাগুলোয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত ও নিহত হন পুলিশের অনেক সদস্য। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতায় কর্মস্থলে ফিরতে অনীহা ছিল ট্রাফিক ও পুলিশ সদস্যদের। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি ট্রাফিক ও পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। তারই প্রেক্ষিতে আজ সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের সড়কে দায়িত্ব পালনে নামেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।


এদিকে ৭টি থানায় দাপ্তরিক কাজ, মামলা ও তদন্ত কার্যক্রমসহ নাগরিক সেবা দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত আছে থানা-পুলিশ। এর আগে গত কয়েক দিন ধরে সড়কে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় কাজ করছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয়রা।


যানবাহনচালক ও স্থানীয়রা জানান, সড়কে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করায় স্বস্তি ফিরেছে তাঁদের মধ্যে। এখন কোনো যানজট নেই। তবে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের আস্থা যত তাড়াতাড়ি ফিরবে, তাড়াতাড়ি সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। এর আগে ট্রাফিক না থাকায় শিক্ষার্থীরা যেভাবে সড়কে ট্রাফিকের ভূমিকা পালন করছে, সেটাও অনেক ভালো উদ্যোগ ছিল। হানা-হানি ও সহিংসতা নয়, দেশে শান্তি চান বলেও জানান তারা।


শহরের কোথাও অকারণে দাঁড়াতে পারেনি কোনো গণপরিবহন। গাড়িগুলোকে চলতে হয়েছে লেন মেনে। যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রীও তুলতে পারেননি চালকরা। বাসচালকদের আজীবনের অভ্যাস এক দিনে বদলে যেতে দেখেছেন শহরবাসী।


শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন ট্রাফিক যেভাবে সড়কে দায়িত্ব পালন করতেন, তারাও চেষ্টা করেছেন। তবে সড়কের নীতিগুলো অনুসরণের বিষয়গুলো দেখছেন তারা। মোটরসাইকেলে দু’জনের বেশি বসতে দেখলে জীবনের ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন হওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে অন্তত একজনকে নেমে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন।


ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক অফিসের পুলিশ পরিদর্শক (শওযা) প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, সরকারে আদেশ-নির্দেশ মেনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করতে হবে। তারাই ধারাবাহিকতা মেনে সকাল থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের প্রতি আস্থা ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি সড়কে শৃঙ্খলা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকে মাঠ কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। কোনো সমস্যা নাই।


ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে সাতটি থানা স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। সেবা গ্রহীতারা থানায় সেবা নিতে আসছেন। জেলা ট্রাফিক পুলিশ তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। মানুষের সেবা নিশ্চিত করাই পুলিশের অঙ্গীকার।


বিবার্তা/মিলন/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com