টাঙ্গাইলে ফিরছে কর্মচাঞ্চল্য, কর্মজীবীদের মাঝে স্বস্তি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৫:৪২
টাঙ্গাইলে ফিরছে কর্মচাঞ্চল্য, কর্মজীবীদের মাঝে স্বস্তি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রায় ১ সপ্তাহ স্থবির থাকার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করছে টাঙ্গাইলের ব্যবসা-বাণিজ্যর পরিস্থিতি। কারফিউ শিথিল করায় টাঙ্গাইলে বেড়েছে কর্মজীবী মানুষদের কর্মচাঞ্চল্য। যদিও


এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি জেলার পরিস্থিতি, তারপরেও জীবনের প্রয়োজনে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে পেশাজীবী মানুষ। ধীরে-ধীরে সচল হচ্ছে জেলার অর্থনীতির চাকা।


জানা গেছে, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) কোটা বিরোধী সাধারণ ছাত্রদের সাথে পুলিশ ও আইনশৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিনব্যপী ব্যাপক সংঘর্ষের ফলে জেলায় দোকানপাট, অফিস-আদালতসহ সকল ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে শুক্রবার রাত ১২ থেকে দেশে অনিদিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হলে জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। এসময় শুধু মাত্র কাচা বাজার ও ওষুধের দোকান ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকে।


গত বুধবার থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ কায়ছারুল ইসলাম জেলার পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবদ রাখে। দিনের বাকি সময় কারফিউ শিথিল করা হয়। এরই মধ্যে সরকার অফিস-আদালত খুলে দিলে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পথে।


রিকশা চালক ইদ্রিস আলী বলেন, গত কয়েক দিন রিকশা চালাতে পারি নাই তাই কামাই রুজিও হয়নি। দু-একদিন ভয়ে-ভয়ে যাও রিকশা নিয়ে বের হতাম শহর ছিল জনমানব শুন্য। তাই যাত্রী হতোনা। বাড়িতে ৬ জনের সংসার খাওয়া তো বন্ধ থাকে না।


শহরের বটতলার চা ও ভাতের দোকানদার মো. বাবলু মিঞা বলেন, গত শনিবার দোকান খুলছিলাম, শহরে কোন লোক না থাকায় কোন বেচাকিনি করতে পারি নাই। ভাত-তরকারি বিক্রি করতে না পেরে বাড়িতে নিয়া গেছি। কোন রোজগার নাই তবুও কিস্তির টাকা দিতে হয়েছে। কর্য করে কিস্তির টাকা দিয়েছি। কবে যে দেশ স্বাভাবিক হবে। কামাই-রুজি করে বউ-পোলাইপান নিয়ে চলতে পারমু?


শহরের রাজ মিস্ত্রির সহকারী, মো. জুলহাস উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, নওশের আলী, মোহাম্মদ আলীসহ অনেকেই বলেন, ১ সপ্তাহ কাজকর্ম না থাকায় জমানো টাকা ভেঙে বাজার-ঘাট করছি। অনেকে ধার-দেনা করে চলেছি, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছি।


অটোরিকশা চালক নয়া মিঞা, দুলাল মিয়া, নিরাঞ্জন চন্দ্রসহ অনেকেই বলেন, কিস্তির টাকা দিয়ে অটো কিনেছি। শহরের অবস্থা থমথমে থাকায় অটো নিয়ে বের হই নাই। কিস্তির টাকাও পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।


শহরের ফুটপাতে একাধিক চানাচুর ও ফুচকার দোকানীরা বলেন, কিস্তির টাকা তুলে চালান নিছিলাম, ১ সপ্তাহ বন্ধ থাকায় চালান ভেঙে খেয়েছি। এখন চালান নাই, কিভাবে যে দোকান করি বুঝে উঠতে পারছি না। কিস্তির টাকা পরিশোধ না হলেতো নতুন করে টাকা তুলতে পারবো না।


টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান-বীন- মুহাম্মদ আলী জানান জেলার সিভিল প্রশাসনের তত্বাবধানে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রমে বর্তমানে জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কটি যানচলাচলে যেন কোন ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সে বিষয়ে সবোর্চ্চ গুরত্ব দেওয়া হচ্ছে। দুই-একদিনের মধ্যেই জেলার কারফিউ তুলে নেওয়ার জন্য সবোর্চ্চ পর্যায় আলাপ-আলোচনা চলছে।


বিবার্তা/ইমরুল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com