পাহাড় ধসে কক্সবাজারে ৪ জনের মৃত্যু
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:৪০
পাহাড় ধসে কক্সবাজারে ৪ জনের মৃত্যু
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ফের পাহাড় ধসে জেলায় ৪ জনের করুণ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। মৌসুমী বায়ু প্রবাহে পাহাড়ের পরিস্থিতি আরো নাজুক হতে পারে। রয়েছে আরো পাহাড় ধসের শঙ্কা।


১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩ টা থেকে টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের পৃথক পৃথক ঘটনায় জেলায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।


বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের পূর্ব পল্যান কাটা এলাকায় বসতঘরে পাহাড় ধসে স্থানীয় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা বেগম (৩০) নিহত হয়েছেন। এছাড়া শহরের ০৭ নং ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় সাইফুলের ছেলে মো: হাসানের (১০)। একইদিন দুপুর একটার দিকে ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরিপাড়ার পাতাবুনিয়া নামক প্রত্যন্ত এলাকায় পাহাড় ধসে আরও এক গৃহবধূর মৃত্যুর এঘটনা ঘটে। রাত ১০ টার দিকে শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পরিবারের ৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করলেও মিমকে মৃত উদ্ধার করা হয়।


পাহাড় ধসে নিহতরা হলেন: ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরিপাড়ার পাতাবুনিয়া নামক প্রত্যন্ত এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫), পূর্ব পল্যান কাটা এলাকায় বসতঘরে পাহাড় ধসে স্থানীয় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা বেগম (৩০), শহরের ০৭ নং ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকার সাইফুলের ছেলে মো: হাসানের (১০), কলাতলী সৈকতপাড়ায় এলাকার মিম। নিহত গৃহবধূর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার বলেন, আমার মা ভাইকে নিয়ে দুপুরে ভাত খাচ্ছিলো এসময় হঠাৎ পাহাড় এসে রান্নাঘরে পড়ে। এঘটনায় আমার মা এবং ভাইকে মাটির ভেতর থেকে বের করা হয় এলাকাবাসীর সহায়তায়। পরে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আমার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, আচমকা পাহাড়ের কাদা মাটি বসত ঘরে পড়লে চাপা পড়ে গৃহবধূ জমিলা। আর মাটির দেয়াল পড়ে নিহত হয় শিশু হাসান।


নিহত জমিলার স্বামী করিম জানান, সকাল ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সপরিবারে। এসময় আচমকা পাহাড়ের কাদা মাটি বসত ঘরে পড়লে চাপা পড়ে গৃহবধূ জমিলা। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।


নিহত শিশু হাসানের পরিবার জানায়, পাহাড় ধসে ঘরের মাটির দেওয়ালে পড়লে মাটির দেওয়াল সহ আসবাবপত্র পড়ে নিহত শিশু হাসানের গায়ে। ঘটনাস্থল থেকে তাকে মৃত উদ্ধার করে স্থানীয়রা।


ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কক্সবাজারের স্টেশন অফিসার জাহেদ চৌধুরী বলেন, নিয়মিত সতর্কতা পরিচালনার কথা। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, সাধারণ মানুষকে বারবার বলার পরেও টানা বর্ষনে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে চায়না মানুষ। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনা।


কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান বলেন, ‘বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৩৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


এদিকে পাহাড়ধসের পরপরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন, পাহাড়ের ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরে নিরাপদ স্থানে যেতে করা হচ্ছে মাইকিং।


গেল ৩ জুন উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের দুটি ক্যাম্পে পাহাড়ধসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৯ জুন উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় পাহাড়ধসে আটজন রোহিঙ্গা ও দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এ ঘটনার দুই দিন পর ২১ জুন ভোরে কক্সবাজার শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী নিহত হন। এসবের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও মর্মান্তিক দুর্ঘটার শিকার হলো কক্সবাজার জেলার মানুষ।

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com