নোয়াখালী পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা, সীমাহীন ভোগান্তি
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ১৬:০২
নোয়াখালী পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা, সীমাহীন ভোগান্তি
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নোয়াখালী পৌর এলাকার ও জেলা শহর মাইজদীতে গত কয়েকদিনের মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক ছাড়া বেশির ভাগ সড়ক ও এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পৌর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে এবং পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া শহরবাসীর এ দুর্ভোগ বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ি করছেন অনেকে।


২ জুলাই, মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা ভারি বৃষ্টিতে আরো কয়েকগুণ ভোগান্তি বেড়েছে জলাবদ্ধতায় বন্দি পৌরবাসীর।



আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ঘন্টায় জেলায় ১০৯মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।


সরেজমিনে পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানিতে ডুবে গেছে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের সামনের অংশ। পানি ঢুকে পড়েছে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নিচতলায়। অফিস কক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম। পানিতে ডুবে গেছে জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, প্রেসক্লাব, রেডক্রিসেন্ট, বিআরডিবি, ম্যাটস্, বিদ্যুৎ অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড কক্ষ, শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, বন বিভাগের বাংলো, নোয়াখালী সরকারি কলেজ, মাইজদী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বেসরকারি অনেক অফিস সমূহ।



এদিকে জেলার প্রধান সড়কে পানি না থাকলেও টাউন হল মোড়, ইসলামিয়া সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, জেল খানা সড়ক, মাইজদী বাজার সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক এখন কয়েক ফুট পানির নিচে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জীবিকার তাগিদে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী, অফিসগামী কয়েক হাজার মানুষ।


স্থানীয়রা বলছেন, নোয়াখালী পৌরসভা দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোর মধ্যে একটি। তবে দীর্ঘ এতো বছরে এ শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ কোন কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কালেভাদ্রে কয়েকটি ড্রেনের কাজ করা হলেও সেগুলো নিম্নমানের। হালকা বৃষ্টি হলেও এসব ড্রেন দিয়ে পানি নামতে অনেক সময় লাগে। এছাড়াও পৌর কর্তৃপক্ষ এ ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করাসহ কোনো প্রকার তদারকি না করার ফলে বর্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পৌরবাসীকে। জলাবদ্ধতার সময় বিভিন্ন ময়লা পানিতে শরীরের বিভিন্ন চর্ম রোগের দেখা দিচ্ছে অনেকের।



নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মাত্র ৬ ঘণ্টায় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দিনেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ভারি বর্ষণের ফলে আমার অফিস ও সড়ক ডুবেছে। আমিও জলাবদ্ধতায় আটকে আছি।


পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, জলাবদ্ধতা রোধ প্রকল্পে শহর ও আশপাশের ১৬১ কিলোমিটার খাল খনন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালী। সাথে সাথে নোয়াখালী খালও খনন করা হয়েছে। যেটা নোয়াখালীর দুঃখ ছিল। তবে পুরোপুরি জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে ড্রেন ও নালা রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।


নোয়াখালীর পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, সরকারি অফিসসহ বিভিন্নস্থানে জলাবদ্ধতার ফলে ভোগান্তির বিষয়ে আমি খবর পেয়েছি। আসলে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না থাকায় এমন হয়েছে। আমার কর্মীরা কাজ করছে। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সাময়িকভাবে এটা হয়েছে। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে এটি সমাধান হয়ে যাবে বলে আমি আশা করছি। একই সাথে পৌরসভার জলাবদ্ধতা রোধে আমাদের একটি প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে। এ বর্ষা মৌসুমের পর আমরা ড্রেনের কাজ শুরু করতে পারবো বলে জানিয়েছেন মেয়র।


বিবার্তা/সবুজ/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com