
বগুড়ায় কর্মরত এক নারী চিকিৎসক মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মারা যাওয়া ওই চিকিৎসকের নাম রুমানা শারমিন রূম্পা (৪২)। তিনি বগুড়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (সার্জারি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, বুধবার (১৯ জুন) রাতে বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ার নিজ বাড়িতে বিপুলসংখ্যক ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় ডা. রূম্পা সেখানে মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, বৃন্দাবনপাড়ার ‘জমিদার ভিলা’ নামক বাসাটি ডা. রূম্পার পৈতৃক নিবাস। তার বাবা প্রয়াত আব্দুল কাইয়ুম খলিফা জমিদার পরিবারের সন্তান। ডা. রূম্পা তার বাবার বাড়িতেই চিকিৎসক স্বামী বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (বায়ো-ক্যামিস্ট্রি) ডা. সাজেদুল ইসলাম সুজন, বৃদ্ধা মা রওশন আরা বেগম ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে থাকতেন।
ডা. রূম্পার আত্মহত্যার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি। তার বৃদ্ধা মা রওশন আরা বেগম ছাড়া বাড়িতে অন্য কেউ নেই। চিকিৎসক স্বামী সুমন ঢাকায় লাশের সঙ্গে অবস্থান করছেন।
ডা. রূম্পার চাচাতো ভাই নিশান খলিফার বরাত দিয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, ওই চিকিৎসক দম্পতির একমাত্র মেয়ের লেখাপড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ডা. রূম্পা তার মেয়েকে শাসন করায় স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ সৃষ্টি হয়। সেই অভিমানে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করেন রূম্পা।
ডা. কাজল বলেন, চিকিৎসক হিসেবে ডা. রূম্পা অনেক ভালো ছিলেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিনি খুবই প্রিয় চিকিৎসক। তার মানসিক দৃঢ়তাও যথেষ্ট ছিল। তিনি হঠাৎ এমনটি করবেন তা কেউ বিশ্বাসই করতে পারছে না। ঢাকা থেকে লাশ সরাসরি বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে শুক্রবার বাদ এশা জানাজা শেষে লাশ বাড়িতে নেওয়া হবে। পরেরদিন শনিবার সকালে বৃন্দাবনপাড়া ঈদগাহে দ্বিতীয় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানকার চিঠি পেয়েই তার মৃত্যুর বিষয়টি সদর থানা পুলিশ অবগত হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বগুড়ায় পৌঁছবে। ঘটনার জানার পর তার আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিবার্তা/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]