
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনের পাশেই রেলওয়ের মালিকানাধীন পুকুর রয়েছে। একটি অসাধুচক্র দীর্ঘদিন ধরেই ময়লা-আর্বজনা ফেলে পুকুরের একাংশ ভরাট করেছে। ভরাটকৃত জায়গা দখলের জন্য বসিয়েছে বাজার, যা বউ বাজার নামে পরিচিত।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারের দোকানদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন দুইশত-তিনশত টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। তাতে দৈনিক এ বাজার থেকে চল্লিশ থেকে ষাট হাজার টাকার মতো চাঁদা ওঠে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বউ বাজারের ইজারাদার জামাল মিয়া বিবার্তাকে বলেন, আমরা পৌরসভা থেকে নয় লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা দিয়ে বাজারটি লিজ নিয়েছি।
আরো দেখা যায়, রেলওরের সীমানা প্রাচীরে ভূ-সম্পদ কর্মকর্তার বরাদ দিয়ে সাইনবোর্ড, যাতে লেখা আছে- এই জায়গার মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে, এখানে বাজার বসানো সম্পূর্ণ নিষেধ। রেলওয়ের ভাষ্যমতে এই বাজার সম্পন্ন অবৈধ। এর পাশেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ১২৬২ স্মারক নম্বরে একটা সাইনবোর্ড টানিয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে দুইজন ব্যক্তিকে ৯,৭৫,০০০ টাকার বিনিময়ে বাজার ইজারা দিয়েছে। এখন জনমনে প্রশ্নে উঠেছে রেলওয়ের নিজস্ব জায়গা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কিভাবে ইজারা দিয়ে বাজার বসানোর অনুমতি দেয়?
এই বিষয়ে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা বিষয়ক সংগঠন তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামিম আহমেদ বিবার্তাকে জানান, যেহেতু জায়গাটি বাংলাদেশ রেলওয়ের, সেহেতু এই জায়গার লিজ দেওয়া না দেওয়ার এখতিয়ার শুধুমাত্র বাংলাদেশ রেলওয়ের। এখানে রেলওয়ের নীরবতায় অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। বাজারটি লিজ বা অন্য কোনোভাবেই পাশে থাকা জলাধারটি ভরাট করতে পারে না! আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ খেয়াল করছি যে, কৌশলে বাজার সম্প্রসারণের নামে জলাধার ভরাটে অপচেষ্টা করছে একটি মহল- যা কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। এখানে পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশ আইন প্রয়োগ করার যথেষ্ট সুযোগ থাকলেও অধিদফতরের নীরবতায় হতাশ ‘তরী বাংলাদেশ’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জসিম উদ্দিন বিবার্তাকে জানান, এই সম্পত্তি রেলওয়ের, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কোনভাবেই ইজারা দিতে পারে না। আমি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল প্রধান ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা সুজন চৌধুরীকে কল দিলে তিনি কল কেটে দিয়ে এসএমএসের মাধ্যমে ডিভিশনাল স্টেট অফিসারের নম্বর প্রেরণ করে ওনার সাথে যোগাযোগের কথা বলেন। ডিভিশনাল স্টেট অফিসারের নম্বরে বেশ কয়েকবার কল করার চেষ্টা করলে নম্বরটি ডিএকটিভ দেখায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, সরকারে জায়গা সরকার ইজারা দিয়েছে- আপনার কি সমস্যা, আপনার কোন সমস্যা আছে? নিশ্চয় পৌরসভা আর রেলওয়ে এক নয়। পৌরসভা রেলওয়ের জায়গা ইজারা দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌরসভার আইনে মেয়র এই বাজার ইজারা দিয়েছেন। জায়গা কার দেখার বিষয় না, বাজারটি যেহেতু পৌর এলাকার সেই আইনের বলে পৌরসভা এই উদ্যোগ নিয়েছে।
বিবার্তা/আকঞ্জি/রোমেল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]