কাউখালীর জোলাগাতি মাদরাসায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৪, ১৬:৩৯
কাউখালীর জোলাগাতি মাদরাসায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান
কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে পিরোজপুরের কাউখালীর জোলাগাতী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার টিনসেড ভবন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। এতে ছয়টি শ্রেণি কক্ষ, অধ্যক্ষর কক্ষ, কম্পিউটার কক্ষের আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। লেখাপড়ার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বর্তমানে খোলা আকাশের চলছে পাঠদান।


স্থানীয়রা জানান, ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত উপজেলার পুরানো মাদরাসাটিতে নূরানী বা শিশু শ্রেণি থেকে ফাজিল (ডিগ্রী) পর্যন্ত পড়ানো হয়। এতে সীমান্তবর্তী দুটি উপজেলা ভান্ডারিয়া ও রাজাপুরসহ শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের প্রায় ৭০০ ছাত্র-ছাত্রী নিয়মিত পড়ালেখা করে আসছে।


সরেজমিনে দেখা যায়, মাদ্রাসায় পুরোনো আমলের লম্বা একটি মাত্র টিনের ঘর, ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর। ৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বহুতল ভবনের কাজ চলমান। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এসব ঘরের টিনের ছাউনি উড়ে যায়। যে টিনসেট ভবনের শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত ক্লাস হতো সেটি গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে মাদ্রাসাটিতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহিম।


মাদরাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা আক্তার বলে, ঘূর্ণিঝড় আমাদের মাদরাসা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সামনে আমাদের পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে আমাদের ক্লাস করানো হচ্ছে। দ্রুত মাদরাসার ভবনটি নির্মাণ হওয়া দরকার।


অভিভাবক মো. আবুল বাশার জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো মাদরাসাটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সামনে পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সিগন্যাল পেলে গ্রামবাসী গবাদিপশু নিয়ে মাদরাসার পাকা ভবনে এসে আশ্রয় নেয়। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি এই মাদরাসাটি একটি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হোক।


শিয়ালকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান জানান, এটা একটি এই অঞ্চলের পুরাতন মাদরাসা। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।


জোলাগাতী মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় যেন পিছিয়ে না পরে তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে, ভেঙে পড়া জরাজীর্ণ ভবনে, মসজিদের বারান্দায় ও এতিমখানায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।


মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির তালুকদার রাজু বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই মাদরাসাটির আধুনিক ভবনসহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।


এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সজল মোল্লা বলেন, শিক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসাটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা হবে।


বিবার্তা/রবিন/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com