ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব
ইন্দুরকানীতে গাছ চাপায় বৃদ্ধার মৃত্যু
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ১৯:৩৫
ইন্দুরকানীতে গাছ চাপায় বৃদ্ধার মৃত্যু
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ঘরের উপরে গাছ চাপায় চানবরু বিবি নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।


২৭ মে, সোমবার ভোর রাতে উপজেলার বালিপাড়ার উত্তর ঢেপসাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।


নিহত চানবরু বিবির ছেলে নাসির মোল্লা জানান, ঝড়ের সময় আমার মা ওই ঘরে ছিলেন। এমন সময় প্রচণ্ড বাতাসে বাড়ির উঠানে থাকা চাম্বল গাছ ঘরের উপরে পড়লে ঘরটি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় আমার মা চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।


চারদিক পানিতে তলিয়ে থাকায় সোমবার তাকে দাফন করতে পারে নাই তাঁর স্বজনরা। মঙ্গলবার সকালে পানি একটু কমলে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


২৮ মে, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিকী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন।


এদিকে ইন্দুরকানীর উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্রাধিক ঘর। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলার ২২ সহস্রাধিক গ্রাহক। বিদ্যুৎলাইন স্বাভাবিক হতে এক সপ্তাহ লাগবে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের ইন্দুরকানীর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ ইসমাইল হাওলাদার।


এছাড়া কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকার। ভেসে গিয়েছে প্রায় দেড় সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। বিলীন হয়েছে উপজেলার প্রায় ৯৫ ভাগ বেড়ি বাঁধ। একশ কিলোমিটারের বেশি গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে উপজেলা জুড়ে। সাধারণত এই উপজেলার অধিকাংশ স্থানেই নেই গভীর নলকূপ। তাই বাধ্য হয়ে এখানকার জনসাধারণ নদী, খাল ও পুকুরের পানির উপরে নির্ভরশীল।


এছাড়া উপজেলার অধিকাংশ বাড়িতেই এখন পর্যন্ত রান্না করার মতো কোন পরিস্থিতি নেই। রান্নার চুলা এখনো পানিতে ডুবে আছে। আছে জ্বালানির অভাব। আবার সব গ্রাম থেকে পানি এখনও নামে নাই। বেড়ি বাঁধ ও রাস্তা ভেঙে মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। অভুক্ত মানুষের হাহাকার দেখা দিয়েছে উপজেলা জুড়ে। মোবাইল নেটওয়ার্কও দুর্বল এখানে। ঝড়ো হাওয়ায় ভেঙেছে অনেক গাছ। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে নির্বাক হয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছায়নি পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা।


ইন্দুরকানীর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল আহসান গাজী জানান, আমার নিজস্ব তহবিল থেকে সকল আশ্রয়ণ কেন্দ্রে নগদ অর্থসহ খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে এখানে আরো ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। উপজেলার বেড়ি বাঁধগুলোর ৯৫ ভাগ বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক। জরুরি ভিত্তিতে বেড়ি বাঁধ, রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার একান্ত প্রয়োজন।


বিবার্তা/শামীম/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com