
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার এমসিকিউ উত্তরপত্রে ভুল উত্তর সরবরাহ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ২৫ শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম দেবাশীষ চন্দ্র। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা থানাহাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৫ মিনিট পূর্বে সহকারী শিক্ষক দেবাশীষ চন্দ্র কেন্দ্রের ১৪ নং কক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের এমসিকিউ উত্তর সরবরাহ করা হবে জানিয়ে উত্তর লিখতে নিষেধ করেন। পরে তিনি একটি লিখিত কাগজ হাতে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের এমসিকিউ উত্তর লিখতে বলেন।
শিক্ষার্থী শাহানাজ পারভীন, পুষ্পিতা আক্তার, ঈষিতা খাতুন বলেন, পরীক্ষা শেষে আমরা বাড়িতে ফিরে দেখি স্যারের সরবরাহ করা সবগুলি উত্তর ভুল। এ বিষয়ে স্যারের কাছে গেলে তিনি বলেন সমস্যা নেই তোমরা পাশ করলেই হলো।
শিক্ষার্থী শাহানাজ পারভীন আরো বলেন, অভিভাবকদের সাথে পরামর্শ করে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করতে দেরি হয়েছে।
অভিযোগপত্রের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড দিনাজপুরের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দেয়া হয়েছে।
পরীক্ষার্থী ঈষিতা খাতুনের পিতা ঈদ্রিস মন্ডল বলেন, আমার মেয়ে দেবাশিষ স্যারের কাছে ১৪ মাস গণিত বিষয়ে প্রাইভেট পড়েছেন। প্রস্তুতিও ভালো ছিলো। কিন্তু স্যার ভুল উত্তর লিখে দেয়ায় আমার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে।
শিক্ষার্থী তাসনিম এলাহী তুরার বাবা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর-ই এলাহী তুহিন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমি ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নিয়ে একজন শিক্ষক এমনটা করতে পারেন না। ওই শিক্ষকের ভুল উত্তর লিখে ওই কক্ষের ৪৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৬ জনই লিখে বিপাকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক দেবাশীষ চন্দ্র বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ধরণের কোনো উত্তর সরবরাহ করিনি। অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবি করেন।
থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, বিষয়টি সর্ম্পকে আমি অবগত নই।
থানাহাট এ ইউ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী পাশ করা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিবার্তা/রাফি/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]