চিলমারী-রৌমারী নৌ রুট
‘অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে তৎপর প্রশাসন, যাত্রীদের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ’
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:২২
‘অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে তৎপর প্রশাসন, যাত্রীদের নিরাপত্তা দেবে পুলিশ’
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রতি বছর রমজানের শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ঘরে ফিরতে সহজ পথ হিসেবে কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী নদী পথে লক্ষাধিক যাত্রী পারাপার হন। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে নৌকার মালিক পক্ষ নৌকার মাঝিদের ব্যবহার করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করানো হয়। অনেক সময় যাত্রীরা প্রতিবাদস্বরূপ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হলে তাদের পারাপার করাতে অনীহা প্রকাশ করেন নৌকার মাঝিরা। এতে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যাত্রীদের ঈদের আগে ও ঈদ পরবর্তী সময়ে নৌকা পারাপার করতে হয়।


তবে এবার ঈদ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবেন চিলমারী উপজেলা প্রশাসন। এদিকে ছিনতাই, চুরি ডাকাতিসহ যাত্রীদের জান-মালের নিরাপত্তায় কাজ করবেন চিলমারী মডেল থানা পুলিশ।


চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. মোজাম্মেল হক জানান, ঈদ যাত্রায় চিলমারীর রমনাঘাটে যাতে যাত্রীদের সঙ্গে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি, হয়রানি, হুমকি মত অন্যায় কাজ কেউ করতে না পারে সেজন্যে পুলিশ কাজ করে যাবে। এছাড়াও যাত্রীদের যানমালের নিরাপত্তায় থানা পুলিশ কাজ করবেন। এরপরেও যদি এধরনের সমস্যার সম্মুখীন যদি কোনো যাত্রী পড়েন তাহলে আমাদের অবগত করলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। এছাড়াও রমনা ঘাটে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়ন থাকবে।


ঈদ পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময়ে অভিযোগ পাওয়া যায়, সাধারণ দিনের চিলমারী-রৌমারী রুটে একজনযাত্রী পারাপারে ১০০ থেকে ১২০ টাকা নেয়া হয়। কিন্তু ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে ঈদেও প্রায় সপ্তাহখানেক পর ২০০ থেকে ৩০০ টাকা নেয়া হয়। এতে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার বাণিজ্য হয় এই সময় টিতে। এবিষয় গুলো নিয়ে ইতঃপূর্বে একাধিক বার অভিযোগ দিয়ে কাজ হয়নি। উল্টো মালিক পক্ষ ওই সময়ে নৌকা না চালানোর হুমকি দেয়া সহ যাত্রীদের ফেলতেন চরম ভোগান্তিতে।


মাইদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, আমাদের জেলায় কলকারখানা না থাকায় বিভিন্ন পেশাজীবী, দিনমজুর ও শ্রমিকরা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কাজের সন্ধানে যায়। তারা ভাড়া বাঁচাতে ট্রেনে করে কিংবা বিভিন্ন বাস বদল করে রৌমারী/রাজীবপুরে আসে। ফেরি আসার আগে নৌকা করে চিলমারী আসতো। চিলমারী থেকে উলিপুর, রাজারহাট কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে যায়। কিন্তু নৌ-ঘাটের ইজারাদাররা নির্দিষ্ট ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের হয়রানি করেছিলো। বিগত বছরে যাত্রীদের এই অভিযোগের কোন সমাধান আসেনি। এই বছরে ফেরি চালু হলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ফেরিটিও দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে আছে। ঈদে ফেরি চলাচল না হলেও যেন যাত্রীদের হয়রানিমূলক কোন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে, এটা এলাকাবাসী হিসেবে প্রশাসনের নজরদারি কামনা করছি।


রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ঈদ এলেই ইজারাদারদের বাড়তি ভাড়া নেওয়ার উৎসব শুরু হয়। একজন বিশেষ ব্যক্তির পরিচয়ে বর্তমান ইজারাদার বেপরোয়া হয়ে ভাড়া তোলেন। জনগণের মধ্যে বিতৃষ্ণা ভাব চলে এসেছে এই রুটের প্রতি।


চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন এবার ঈদে নৌ পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবেন। তিনি বলেন, নৌ রুটে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা হয় এজন্য ঘাট সংশ্লিষ্ট যারা আছে তাদেরকে ডেকে কথা বলব। আর এরপরও যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নেয় এমন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বিবার্তা/রাফি/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com