ইউটিউবে ভিডিও দেখে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ২০:৪৬
ইউটিউবে ভিডিও দেখে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নীলফামারীতে আলোচিত স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী আশিকুল হক মোল্লাকে (৪০) চিকিৎসা শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


৩১ মার্চ, রবিবার দুপুরে কারাগারে পাঠানোর আগে তাকে নীলফামারীর চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীন কবিরের আদালতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ও নিজে আত্মহত্যার চেষ্টার বিষয়টি স্বীকার করে ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি দিয়েছেন।


জবানবন্দিতে অভিযুক্ত জানান, ব্যবসায়ে ১৮ লাখ টাকা দেনা তার। এতে পাওনাদাররা তাকে রোজ চাপ দিতে থাকেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পরে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এজন্য সে দীর্ঘ ১০ দিন ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন ভিডিও দেখে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।


সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম পিপিএম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


পুলিশ জানায়, চলতি বছরের গত ২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী বন্দর বাজার এলাকার নিজ বাড়িতে আশিকুল হক মোল্লা তার স্ত্রী তহুরা বেগম (৩০), মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা তানিয়া (১১) ও জারিন তান্নিমকে (৬) শ্বাসরোধে হত্যা করেন। স্ত্রী সন্তানকে হত্যার পর আশিকুল নিজে গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় অভিযুক্ত আশিকুলকে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এ ঘটনায় নিহত তহুরা বেগমের ভাই আসাদুজ্জামান নূর আসাদ বাদি হয়ে আশিকুল মোল্লার নামে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।


প্রতিবেশি ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশিকুল হক মোল্লা খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তিনি শারিরীকভাবেও কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তানরা ছিলেন পর্দানশীল। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তারা বাড়ি থেকে বের হতেন না। পর্দার কারণে স্বজনদের অনেকে আশিকুলের স্ত্রীর মুখ দেখেননি। তিনি পর্দার আড়ালে থেকে কথাবার্তা বলতেন। আশিকুল হক ঋণগ্রস্ত থাকার কথা এর আগেও অনেককে জানিয়েছিলেন।


আশিকুল হক মোল্লার মামাতো ভাই ও নিকট প্রতিবেশি মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম (৪১) বলেন, ঘটনার প্রায় একমাস আগে সে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেয়েছিল। তখন তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। ঘটনার প্রায় তিন থেকে ৪ মাস আগে সৈয়দপুর ও রংপুরের দুই মানসিক চিকিৎসকের চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন। তার মধ্যেই তিনি এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।


সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ওই ঘটনায় আশিকুল হক মোল্লা প্রায় দুই মাস রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তাকে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছিল। শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে নীলফামারী সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com