চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি বন্ধের ৭৬ দিন, ঈদে হবে ভোগান্তি
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৪:৫৫
চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি বন্ধের ৭৬ দিন, ঈদে হবে ভোগান্তি
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী-রৌমারী নৌপথে আড়াই মাস ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতাসহ কুটিরচর এলাকায় পুরাতন বক্স কালভার্টটির বিকল্প রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার কথা জানান বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।


এদিকে দীর্ঘ প্রায় ৭৬দিন ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের বিকল্প রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে ধীর গতিতে বলে এলাকাবাসাীর অভিযোগ। তবে রাস্তা ব্রিজ সংস্কারের দীর্ঘ সময় নিয়ে জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে নানান প্রশ্ন।


অনেকেই বলছেন ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলে নৌকায় যাত্রী বৃদ্ধিসহ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ঈদের মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধের পাঁয়তারা করছেন একটি সিন্ডিকেট মহল।


জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)’র উদ্যোগে চিলমারী-রৌমারী নৌপথে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত বিআইডব্লিউটিসি'র দুটি ফেরিতে পণ্যবাহীসহ বিভিন্ন প্রকার পরিবহন পারাপার করে আসছে। শুষ্ক মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে যাওয়ায় নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। নিয়মিত চ্যানেল খননের মাধ্যমে নাব্যতা সংকটকে অতিক্রম করে বিআইডব্লিউটিসি নিয়মিতভাবে ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করে আসছিল। ফলে অতি অল্প সময়ে উত্তরাঞ্চলে পণ্যবাহী পরিবহনের জন্য এই রাস্তাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই পথে প্রতিদিন ৩০-৪০টি পণ্যবাহী পরিবহন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করছিল।


প্রায় আড়াই মাস পূর্বে রৌমারী ঘাট থেকে ২কি.মি. পরে কুটিরচর এলাকায় একটি পুরাতন বক্স কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ওই কালভার্টটির জন্য গত ১৩ জানুয়ারি থেকে চিলমারী-রৌমারী ঘাটে ফেরি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে। দীর্ঘ সময় পরে কালভার্টের পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তার কাজ শুরু করে এলজিইডি। দীর্ঘ ৭৬ দিনেও কালভার্টের বিকল্প রাস্তার কাজ সম্পন্ন না করায় ফেরি চলাচল বন্ধের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।


এদিকে বেশি দিন ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় নদের খননকৃত চ্যানেল আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন অনেকে। বিকল্প রাস্তার কাজ শেষ হলে চ্যানেল নতুন করে খনন করতে হতে পারে বলে একটি সূত্র জানায়।


৩১ মার্চ, রবিবার দুপুরে চিলমারী বন্দর ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ফেরি বন্ধ থাকায় রাস্তায় পণ্যবাহী কোনো পরিবহন ফেরি পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়নি।


নৌকা চালক নজরুল ইসলাম বলেন, ফেরি চলাচল করলে আমাদের সমস্যা নাই তবে ঈদে ফেরি চললে নৌকার যাত্রী কম হয়। তাছাড়া নদীর পানি কম থাকায় আমার মনে হয় এবার ঈদের মধ্যে ফেরি চলাচল করবে না।


স্থানীয় লোকজন বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বর্তমানে এই পথে কোন পরিবহন আসছে না। ফেরি চলাচল করলে পারাপার সুবিধাসহ ঈদের মধ্যে বাড়িতে আসা যাত্রীরা অনেক সুফল পেত।


ফেরি কুঞ্জলতার মাস্টার অফিসার রেজাউল করিম জানান, এ বিষয়ে আমাদের কমার্শিয়াল বিভাগের সাথে কথা বলেন। আসলে বিকল্প রাস্তাটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। রাস্তা ব্রিজের সমস্যা সমাধান করা মূলত এক সপ্তাহের কাজ ছিল। তিনি মনে করেন আড়াই মাস সময়ের মধ্যে নদী খনন করে ফেরি চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব ছিল।


ফেরি ঘাট ম্যানেজার (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান জানান, আমরা ব্রিজের কাজটি শেষ হওয়ার অবধি অপেক্ষা করছি। ব্রিজসহ রাস্তার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল যাবে না।


তবে ঈদের আগে ফেরি চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।


রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনছুরুল হক জানান, কালভার্টটির ডাইভারশন রোডের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে এবং রাস্তা খুলে দেয়া হবে।


বিবার্তা/রাফি/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com