
সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক এ যেন এক মরণ ফাঁদ। সিলেটের অত্যন্ত সুপরিচিত পর্যটন কেন্দ্র জাফলং যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা সিলেটে ভ্রমণ করতে এসেই প্রথমেই যে স্থানে বেড়ানোর চিন্তা করেন সেটি জাফলং। কিন্তু এই মহাসড়কে যে হারে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে- সেখানে পর্যটকদের মনে এখন ভয় বিরাজ করছে।
সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারত থেকে চোরাই মাল প্রবেশ করে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে হয়। এই রাস্তার অবস্থা এখন এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, একজন যাত্রী নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে প্রতি মুহূর্ত উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়।
নিসচার (নিরাপদ সড়ক চাই) প্রতিবেদন অনুযায়ী এ বছর জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৭টি দুর্ঘটনায় মোট ১৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন। এর বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে জৈন্তাপুর ও হরিপুর এলাকায়।
১৮ মার্চ, সোমবার দুপুরে ওই সড়কে পিকআপ-লেগুনার সংঘর্ষে একসাথে একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া প্রায়ই এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু প্রশাসন কিংবা পরিবহন সংশ্লিষ্টরা এসব দুর্ঘটনার নিরসনে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না।
ওই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তামাবিল সড়ক অবরোধ করা হয়। অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শত শত যানবাহন আটকা পড়লে অবরোধকারীদের সাথে প্রশাসন বৈঠক করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
তারা জানান, এই সড়কে কোন রকম বাধা ছাড়া অবৈধ যানবাহনের মাধ্যমে চোরাচালানের প্রতিযোগিতা চলে। যে কারণে এই সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে।
নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মিশু বিবার্তাকে বলেন, তামাবিল মহাসড়কে যারা গাড়ি চালান অধিকাংশই ট্রেনিং প্রাপ্ত নন। অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে। ফলে এই সড়কে ঘনঘন দুর্ঘটনা ঘটছে।
তামাবিল থানা হাইওয়ের অফিসার ইনচার্জ মো: ইউনুস আলী বিবার্তাকে বলেন, ঘনঘন সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে অদক্ষ কম বয়সীরা গাড়ি চালাচ্ছে। এই সড়কের অনেক জায়গা ভাঙাচোরা। তার উপর ফিটনেসবিহীন গাড়ি।
জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বিবার্তাকে বলেন, রাস্তা ইদানিং অনেকটাই ভেঙে গিয়ে খুব বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে যারা রাস্তায় নামছে- তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।
বিবার্তা/লোকমান/রোমেল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]