
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ২৯ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ঢাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ১ মার্চ, শুক্রবার বিকাল ৩টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে সমাবেশের ঘোষণা করা হয়।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অঙ্গ সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ১লা মার্চ ২০২৪ শুক্রবার বিকাল ৩টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে বাতিল হওয়া ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের পর যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা সঠিকভাবে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করা হতো তাহলে অনেক আগেই কোটা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা থাকতো না। সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে আজও হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বেকার অবস্থায় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের সন্তানদেরকে আর্থিক সংকটে লেখা পড়া করাতে পারেননি। তাদেরকে সামনে এগিয়ে আনার জন্য বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যায় বঙ্গবন্ধু কোটা সুবিধা উপহার দিয়েছিলেন কিন্তু তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৮ সালে ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিতে কোটা রাখার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও নারীদেরকে চরমভাবে অপমান করা হয়েছে। এই কালো সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করে সকল কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।
আল মামুন আরোও বলেন, বারবার দাবি করা সত্ত্বেও আজও পর্যন্ত রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি যা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির নিকট কখনোই কাম্য নয়। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল হয়েছে। সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করার কারণে প্রশাসন দিন দিন জামাতিকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে কমিশন গঠন করতে হবে। আজও পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। বিএনপি-জামাত জোটের তৎকালীন মন্ত্রী কুখ্যাত আলবদর কমান্ডার যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান আল মুজাহিদ একদিন জাতীয় সংসদে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন, এদেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি! তারা এধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দিয়ে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের জাতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার (Preamble of the Constitution) মধ্যে আজও পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দ যোগ করা হয়নি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স, সহ-সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সুজন, কানিজ ফাতেমা, শাহীন মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় চন্দ্র দাশ, ঢাকা কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আল ইমাম, দপ্তর সমন্বয়ক নুর আলম সরদার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আগামীকাল (১ মার্চ) শুক্রবার বিকাল ৩টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বর ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা, নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও জেলা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে দেশের সকল চাকরি প্রত্যাশী এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিজেদের যৌক্তিক ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে স্ব স্ব ব্যানারে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবার্তা/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]