বিষ মেশানো পানীয়র মাধ্যমে ফজলুকে হত্যা করেন জব্বার
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০১
বিষ মেশানো পানীয়র মাধ্যমে ফজলুকে হত্যা করেন জব্বার
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের ফজলুকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কোমল পানীয় স্পিডের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যা করেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক জব্বার।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি জাবীদ হাসান।


নিহত ফজলু উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের স্কুলপাড়ার কাশেমের ছেলে। জব্বার একই এলাকার মো. দলীল উদ্দিনের ছেলে।


পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জব্বার জানিয়েছে, ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় সাড়ে ৬ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধের জন্য ফজলুকে হত্যা করে তার পাখিভ্যান ও মোবাইল ফোন বিক্রি করে টাকা নেয়াই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।


পুলিশ জানায়, উথলী ইউনিয়নের সন্তোষপুরের গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে মজনু খাঁ ওরফে ফজলু এবং একই গ্রামের দলিল উদ্দিনের ছেলে জব্বার সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই। তারা একই পাড়ায় বসবাস করতো এবং তাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। তারা দুই ভাই উপজেলার দেহাটি গ্রামের পোল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো এবং নিয়মিত ফজলুর পাখিভ্যানে যাতায়াত করতো।


মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তারা পোল ফ্যাক্টরি থেকে কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরে আসে। একইদিন সন্ধ্যার পর ফজলুর পাখিভ্যানে করে তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে ধোপাখালী বাজারের একটি দোকান থেকে কোমল পানীয় স্পিডের বোতল কিনে অর্ধেক নিজে খেয়ে বাকিটুকু বোতলে কৌশলে বিষ মিশিয়ে রাখে হত্যাকারী জব্বার।


ঘটনাস্থলের কাছাকাছি চলে আসলে স্পিডের বোতল ফজলুকে দিয়ে খেতে বলে সে। সারারাত ফজলু বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যায়। তার মোবাইল ফোনে কল করলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।


বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে পরিবারের লোকজন লোকমুখে জানতে পারে ফজলু জীবননগর থানাধীন মনোহরপুর গ্রামের ভৈরব নদের পাড়ে মোশারফ গাইনের পানের বরজ সংলগ্ন কাঁচা রাস্তার পাশে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছে এবং তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে।


জীবিত আছে ভেবে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।


ওইদিনই ফজলুর পিতা কাশেম আলী বাদী হয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে জীবননগর থানা পুলিশকে জানান। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানাতে না পারায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়।


এদিকে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে জীবননগর থানার এসআই ফিরোজ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ জীবননগর বাসস্ট্যান্ড এলাকা হতে জব্বারকে গ্রেফতার করেন।


গ্রেফতারের পর বিভিন্ন মিথ্যা ও কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতে চেষ্টা করে জব্বার। তবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং জানায় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।


তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানোর পর ঝিনাইদহের ডাকবাংলা এলাকা হতে উদ্ধার করা হয় ফজলুর পাখিভ্যান ও মোবাইল। ফোনটি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও পাখি ভ্যানটি বিক্রি করতে ব্যার্থ হয় সে।


গ্রেফতারকৃত জব্বারের বিরুদ্ধে রবিবার (২৫শে ফেব্রুয়ারি) জীবননগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে তাকে চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে।


বিবার্তা/আসিম/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com