চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার একটি মাদরাসার চার শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় একই মাদরাসার শিক্ষক (বরখাস্ত) মো. নাছির উদ্দিনকে (৪১) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
১৮ ফেব্রুয়ারি, রবিবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-৩ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি জিকু বড়ুয়া রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি নাছির উদ্দিন আদালতে হাজির ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দণ্ডিত নাছির উদ্দিনের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ছোট বেউলা গ্রামে। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের একটি কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও আবাসিক প্রধান ছিলেন।
মামলার নথিতে বলা হয়, ১০ বছর বয়সী এক শিশুর বাবার অভিযোগ করেন, ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর তার ছেলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাসায় চলে আসে। পালিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, শিক্ষক নাছির উদ্দিন তাকেসহ চারজনকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই মাস ধরে প্রতি রাতে ধর্ষণ করত।
২০২০ সালের ১২ অক্টোবর রাত ১টার দিকে ওই শিশুকে ঘুম থেকে তুলে নাছির উদ্দিন তার নিজের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। ভয়ে চিৎকার করলে তার মুখও চেপে ধরেন ওই শিক্ষক।
আদালতের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বিশেষ পিপি জিকো বড়ুয়া বলেন, আদালত বলেছেন, আসামি একজন সিরিয়াল রেপিস্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। ভিকটিমদেরকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাদানের পরিবর্তে আসামি নিজেই ধর্ষণের মত ঘৃণিত ও জঘন্য অপরাধে জড়িয়েছেন। দিনের পর দিন ভিকটিমদেরকে ভয়ভীতির মধ্যে রেখে জোর পূর্বক বলাৎকার করেছেন, যা তার স্বাভাবিক অভ্যাস হিসেবে পরিলক্ষিত হয়েছে।
যা আসামির ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি এবং ভিকটিমদের ২২ ধারার জবানবন্দি পর্যালোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এসব বিষয় পর্যালোচনায় আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
মাদরাসায় শিক্ষকতা করার আগে পাঁচ বছর বিদেশে ছিলেন নাছির। তার এসব কাজের কথা জানজানি হলে ২০১৮ সালে সন্তানকে নিয়ে নাছিরের স্ত্রী আলাদা হয়ে যান।
গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন নাছির। ২০২১ সালের ৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করে আদালত তার বিচার শুরুর আদেশ দেয়।
বিচার চলাকালে মোট ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রবিবার নাছিরকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয়।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]