বিয়ের ৭ মাসে লাশ হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরলেন সুরমা
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৪১
বিয়ের ৭ মাসে লাশ হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরলেন সুরমা
পাবনা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বিয়ের মাত্র ৭ মাসেই বাবার বাড়িতে ফিরলেন সুমাইয়া খাতুন সুরমা (১৯) নামের এক গৃহবধূ। সুরমা ফিরলেন, তবে সবাইকে কাঁদিয়ে লাশ হয়ে।


সুরমার পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের মোটরসাইকেল না দেওয়ায় স্বামী আসিফ আলী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।


শনিবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নাটোরের লালপুর উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামে আসিফের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।


২২ অক্টোবর, রবিবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘরের বারান্দায় শোয়ানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে।


এ ঘটনায় আসিফ আলীকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত সুরমার বাবা সুজন আলী। প্রধান আসামি আসিফ নিজেই আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।


নিহত সুরমা পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাইপাস স্টেশনের অদূরে ডহরশৈলা গ্রামের সুজন আলীর মেয়ে। তার স্বামী আসিফ আলী নাটোরের লালপুর উপজেলার বৈদ্যনাথপুর গ্রামের হাসেম মণ্ডলের ছেলে।


মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ মার্চ পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের মোটরসাইকেল বাবদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাবি করে আসছিলেন আসিফ। যৌতুকের সেই দাবি পূরণ না করায় প্রায়ই সুরমাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন আসিফ। এরই এক পর্যায়ে কয়েকদিন আগে প্রথম দফায় তাকে মারপিট করেন স্বামী আসিফ। একই দাবিতে গত শনিবার দিবাগত রাতে ফের পেটানোর এক পর্যায়ে গলাটিপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় সুরমার।


মৃত্যুর পর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে রবিবার ভোর ৪টা ৩০মিনিটের সময় আসিফের মা আঁখি বেগম সুরমার বাবা সুজন আলীকে ফোন করে জানান “আপনার মেয়ে অসুস্থ, আপনারা আসেন” বলে খবর দেয়। আসিফের বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখতে পান বারান্দায় সুরমার মৃতদেহ শুইয়ে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।


এদিকে সুরমাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া ও হত্যা মামলা দায়ের করার পর মামলা তুলে নিতে আসামি আসিফের পরিবার থেকে নানাভাবে হুমকি ধামকি ও আপস করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত সুরমার বাবা সুজন আলী।


তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আপস চাই না, আমার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’


অভিযুক্ত আসিফের বাবা হাসেম মণ্ডল মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ছেলে ও তার স্ত্রীর মধ্যে সাংসারিক ও দাম্পত্য কলহে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না তা আমি বলতে পারবো না।’


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লালপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাইবুর রহমান বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, মামলা তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। আসামিও কারাগারে আছে।’


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com