২৫% লাভে সরকারি উন্নয়ন কাজ বিক্রি
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:৩৩
২৫% লাভে সরকারি উন্নয়ন কাজ বিক্রি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সরকারি টেন্ডারে অংশ নিয়ে কাজ পাওয়ার পর তা অন্য কোনো ঠিকাদারের নিকট বিক্রি করা নিয়ম বহির্ভূত। তবে সেই নিয়মের বালাই নেই খাগড়াছড়িতে। এখানে যে যার মতো করছে লাইসেন্স বাণিজ্য। কাজ না করেও শুধুমাত্র লাইসেন্সের বদৌলতে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন ঠিকাদাররা।


অপরদিকে উচ্চদরে কিনে নেয়ার ফলে ঠিক থাকছেনা কাজের গুণগত মান। সম্প্রতি রামগড়ে একটি বিদ্যালয়ের মেরামত ও সংস্কার কাজে ঘটেছে এমনই এক তুঘলকি কান্ড।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার বলিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কারের জন্য চলতি বছরের মার্চ মাসে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। যার টেন্ডার আইডি নাম্বার-৭৯৯৯২৮, আর কাজের চুক্তিমূল্য ধরা হয় ১২ লাখ টাকা। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে সেই কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান 'আলমাস কনস্ট্রাকশন'। তবে কাজ পাওয়ার পর তা ২৫ শতাংশ লাভে অর্থাৎ ৩ লাখ টাকায় অন্য এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।


৩ লক্ষ টাকায় কাজটি বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন মূল ঠিকাদার 'আলমাস কনস্ট্রাকশান' এর সত্ত্বাধিকারী মো. মোস্তফা। তিনি বলেন- 'কাজটি সোহাগ চৌধুরী নামে খাগড়াছড়ির এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।'


১২ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যের কাজ ৩ লাখ টাকা লাভ দিয়ে কিনে নেয়ার পর সেই কাজের গুনগত মান ঠিক রাখা সম্ভব কী না কিংবা এভাবে কাজ নিজে না করিয়ে অন্য কারো কাছে বিক্রি করা কতোটা বিধিসম্মত —এমন প্রশ্নের উত্তরে মূল ঠিকাদার মো. মোস্তফা বলেন, 'কাজের মান ঠিক থাকবে কী না তা উপ-ঠিকাদারের বিষয়। তিনি তো আমার সাথে দরদাম করেই কাজটি কিনে নিয়েছেন। এছাড়া আমার কাজ আমি কার কাছে বিক্রি করবো এবং কতো টাকায় বিক্রি করবো সেটা একান্তই আমার ব্যাপার।'


এদিকে কাজ বিক্রির বিষয়টি মূল ঠিকাদার স্বীকার করলেও তা অস্বীকার করেছেন উপ-ঠিকাদার সোহাগ চৌধুরী। তিনি বলেন- 'আমি কাজটি কিনে নেইনি, আলমাস কনস্ট্রাকশানের হয়েই কাজ করছি আমি।'


এদিকে কাজের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ সমাপ্ত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন রামগড় বলিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা আক্তার। তিনি বলেন, 'এখনো অনেক কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে।' এছাড়া কাজ সমাপ্ত না করেই বিল উত্তোলনের পাঁয়তারা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।


খাগড়াছড়ি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রিসলি চাকমা বলেন, 'আমরা শিডিউল অনুযায়ী কাজ বুঝে নিয়ে তারপর বিল দেবো।' নিজে কাজ না করিয়ে উচ্চলাভে বিক্রির প্রসঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, 'কে কার কাছে কতো টাকায় কাজ বিক্রি করলো তা আমাদের দেখার বিষয় নয়।'


বিবার্তা/মামুন/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com