শিরোনাম
পাবনার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শাহিনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ২০:৫৪
পাবনার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শাহিনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা
পাবনা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পাবনার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহিনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পাবনা জেলার আতাইকুলা থানায় মামলাটি দায়ের করেন পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সি.আই.ডি) এর এ.এস.পি আল মামুন।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান।


মাদক সম্রাট শাহিনের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৭০ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী (২০১৫) এর ৪(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।


মামলায় এজহারে উল্লেখ করা হয়, শাহিন আলম (৩৩) পিতা মো. রইছ উদ্দিন শাহিনকে শিশু অবস্থায় রেখে মারা যান। তখন তার তেমন কোনো জমি বা সম্পদ ছিল না। ২০১০ সালের পূর্বে শাহিন ও তার পরিবারের লোকজন মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। ২০১০ সালের দিকে শাহিন আলম ইয়াবা ব্যবসার অপরাধ জগতে প্রবেশ করে।


শাহিন মূলত মাদক ব্যবসায়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে দ্রুত অর্থ-বিত্তের মালিক হয়। তার কোনো বৈধ আয়ের উৎস ছিল না। তার বিরুদ্ধে ৫টি মাদক মামলা, একটি অস্ত্র মামলা সহ মোট আটটি মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত শাহিন আলম নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে ১০টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করে মাদক দ্বারা উপার্জিত অর্থের লেনদেনের জন্য।


উল্লেখ্য, শাহিন আলম তার মাদক থেকে উপার্জিত অবৈধ টাকা দিয়ে তার নিজ গ্রাম গণেশপুর বাজারে জমি সহ ডুপ্লেক্স একটি বাড়ি এবং ৮বিঘা জায়গা ক্রয় করেছে। সে তার অবৈধ টাকা দিয়ে নিজ স্ত্রীর নামে একাধিক (FDR) এ টাকা জমা এবং করেছে প্রায় ২ কোটি টাকা এলাকাতে সুদভিত্তিক ঋণ দিয়েছে বলে উল্লেখযোগ্য সূত্রে জানা যায়। শাহিনের বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে তাদের দিয়ে চাঁদাবাজি করে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে মানিলন্ডারিং মামলা হয়েছে তাতে আমরা খুবই খুশি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখনো তার মাদক ব্যবসা চলমান রয়েছে। তার মাদক ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন গরিব মানুষকে কাজে লাগায় সাপ্লায়ার হিসেবে।


এলাকাবাসি আরো জানান, এ ধরনের কুখ্যাত পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীদের বিচার না হলে অন্যান্য মানুষ তাকে অনুসরণ করে আরো অবৈধ পেশায় নিযুক্ত হয়ে অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের পথে নেমে পরবে। শাহিন আলম প্রকাশ্যে বলে বেড়ায় টাকা পয়সা দিয়ে অত্র মানি লন্ডারিং মামলার জামিন হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন এবং নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিয়েছে তার কিছুই হবে না। টাকা পয়সা দিয়ে সব ঠিক করে ফেলেছে।


এদিকে শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার অন্যতম সাক্ষী আ. রহিম বলেন আমি শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার সাক্ষী হওয়ার কারণে আমাকে শাহিন তার সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে বাজারে প্রকাশ্যে আমার ওপর হামলা করেছে। এতে অনন্য সাক্ষীরা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সাক্ষীরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন তার মাদক ব্যবসায়ের সাথে আরো যারা জড়িত তাদের নাম সহ যেনো তার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে দাখিল করে ন্যায় বিচার পেতে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করে এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা দাবি করেছে প্রশাসনের কাছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাক্ষী ও তার স্বজনরা বলেন, আমরা আইনের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল ও বিশ্বাস রাখি। যেখানে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন সেখানে মাদক সম্রাট শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার বিচার এদেশের মাটিতে হবেই বলে আশাবাদী। শাহিনের মানি লন্ডারিং মামলার বিষয়ে সিআইডি হেডকোয়ার্টারের ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমে যোগাযোগ করলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, শাহিনের মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে এবং অতি শীঘ্রই তার তার তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে অভিযোগ পত্রটি আদালতে দাখিল করা হবে।


শাহিনের বিষয়ে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা শাহীনকে নজরদারিতে রেখেছি। সে যেকোনো অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


তিনি আরো বলেন, কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি। মাদকের সাথে জড়িত সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


বিবার্তা/পলাশ/সউদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com