অনাবৃষ্টি, খরা, প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা এবং নীচু জলাশয় সমূহ শুকিয়ে গিয়েছে। সে কারণে তোষাপাট পচানো নিয়ে বিপাকে পরেছেন পাট চাষিরা। বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমিতে স্তর করে রাখছে দিনের পর দিন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ার কারণে জমিতে স্তর করে রাখা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে পচানোর ব্যবস্থা করতে পারছে না চাষিরা। অনেকে নীচু জলাশয়ে সেচ মটর দিয়ে পানি ভর্তি করে পাট পচানোর ব্যবস্থা করলেও দু’তিন দিনের মধ্যেই সেই পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। সবমিলে পাট চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছে। চাষিদের স্বপ্ন সোনালি আঁশ যেন গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে তোষাপাট চাষাবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে পাট কাটা শুরু হয়েছে। পাট পচানোর জন্য ১০ হতে ১২দিন সময় লাগে। প্রতি বিঘা জমিতে ৮ হতে ৯ মন পাট উৎপাদন হয়। বর্তমান বাজারে প্রতিমন পাট বিক্রি হচ্ছে গ্রেড অনুযায়ী আড়াই হাজার হতে তিন হাজার টাকা। তোষাপাটের চাষাবাদ চরা লে বেশি।
বেলকা গ্রামের পাট চাষি তারা মিয়া জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ছিলেন। গত ১০দিন হল পাট কেটে জমিতে স্তূপ করে রেখেছেন, পানি না থাকার কারণে পচানোর জন্য জাগ দিতে পারছে না। ইতিমধ্যে জমিতে তার পাট শুকিয়ে গেছে। স্থানীয় জলাশয়ে সেচ মর্টার দিয়ে পানি ভর্তি করে পচানোর ব্যবস্থা করা হলেও পানি দিতে হচ্ছে প্রতিদিন। এতে করে উৎপাদন খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, তারপরও পাটের রং নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাটের রং ভাল না হলে দাম ভাল হবে না। এমনকি খরচ উঠবে না।
হরিপুর ডাঙার চরের মফিজল হক জানান, তিস্তার শাখা নদীতে তার দুই বিঘা জমির পাটের জাগ পানির অভাবে শুকনা জায়গায় পড়ে রয়েছে। শাখা নদীতে পানি দেয়ার মত কোন ব্যবস্থা নেই। মহাবিপাকে পরেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির জানান, অবৃষ্টির কারণে নীচু জলাশয় সমূহ শুকিয়ে গেছে। শুকিয়ে যাবার জন্য একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেকে সেচ মর্টারের মাধ্যমে নীচু জলাশয়ে পানি দিয়ে এবং ব্যক্তিগত পুকুরে পাট পচানোর ব্যবস্থা করছেন। চলতি মৌসুমে পাটের ভাল ফলন হয়েছে। পাট চাষিরা এখন অনেক লাভবান। কারণ পাটের আঁশের পাশাপাশি পাট কাঠির দামও অনেক ভাল।
বিবার্তা/খালেক/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]